নিজস্ব প্রতিবেদক:
বোয়ালমারী (ফরিদপুর): ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিকাশ অ্যাগ্রো ফুড লিমিটেডের (অটো রাইস মিল) বিরুদ্ধে প্রায় ২০০ মেট্রিকটন নিম্নমানের চাল আমদানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। থাইল্যান্ড থেকে আমদানিকৃত এই নিম্নমানের লালচে রংয়ের উৎকট গন্ধযুক্ত চাল স্থানীয় সরকারি খাদ্য গুদামে সরবরাহের উদ্দেশ্যে আমদানি করা হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এই নিম্নমানের চাল স্থানীয় প্রশাসন বোয়ালমারী উপজেলার বাইরে বিক্রি করার নির্দেশনা দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
বিকাশ অ্যাগ্রো ফুড লিমিটেড চলতি মৌসুমে বোয়ালমারী সরকারি খাদ্যগুদামে এক হাজার ৯১৮ টন চাল সরবরাহের বরাদ্দ পায়। ইতোমধ্যে বরাদ্দের প্রায় অর্ধেক চাল সরবরাহ করেছে মিলটি। নিম্নমানের ওই চালও সরকারি খাদ্যগুদামে সরবরাহের উদ্দেশ্যে আনা হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন।
নিম্নমানের চাল আমদানির খবর পেয়ে গত ২৬ আগস্ট সন্ধ্যায় মিলটিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ট্রাক থেকে নিম্নমানের চাল খালাস করে সংরক্ষিত গুদামে রাখা হচ্ছিল। এ সময় তারা দেখতে পান, চালগুলো অত্যন্ত নিম্নমানের, পুরনো ও লালচে রংয়ের দুর্গন্ধযুক্ত।
অটো রাইস মিলটির চেয়ারম্যান বিকাশ সাহা বলেন, ‘আমি ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছি। বর্তমানে মিলটির দেখাশোনা করে আমার ছেলে বিজয় সাহা। এ ব্যাপারে সে ভালো বলতে পারবে।’
বিজয় সাহা বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে মওলা মিল থেকে এসব চাল আমদানি করেছি। চালগুলো সরকারি গুদামে দিতে আমদানি করা হয়নি। বাজারে বিক্রি করতে আমদানি করা হয়েছে।’
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয় এবং ঘটনাটি সরেজমিনে দেখতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ গত ২৯ আগস্ট সকালে বিকাশ অ্যাগ্রো মিল লিমিটেডে যান। চাল পরিদর্শন শেষে UNO Boalmari নামের ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দেওয়া হয়, 'স্থানীয় অনেকের অনুরোধে থাইল্যান্ড থেকে আনা এই চাল বোয়ালমারী উপজেলায় বিক্রি না করার অনুরোধ করায় আগামী ১০ দিনের মধ্যে ১৪০ মেট্রিকটন চাল অন্য জেলায় বিক্রি/পাঠাতে বিকাশ অ্যাগ্রো ফুডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'
উপজলা প্রশাসনের এই বক্তব্যের পর ফেসবুক ব্যবহারকারী Mia Md Khayer কমেন্টস করেন, 'যদি চাল খাওয়ার অনুপযোগী হয় তাহলে অন্য কোথাও বিক্রির সুযোগ দেওয়া উচিত হবে না। বরং খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেওয়া বাঞ্ছনীয় হবে।'
অন্য ফেসবুক ব্যবহারকারী Mahmud Hussain Mahmud লেখেন, 'যদি অনুপযোগী হয়, তাহলে কোথাও বিক্রি করা যাবে না। দেশের অন্য জেলায় বিক্রি করতে পারলে বোয়ালমারীতে নয় কেন? সেখানে ব্রিটিশ লর্ড থাকে নাকি!'
আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী Anisur Rahman তার কমেন্টসে লেখেন, 'এ চালটা আমার মনে হয়, জব্দের তালিকায় রাখা উচিত।'
সান নিউজ/ এআর