নিজস্ব প্রতিবেদক:
বগুড়া: সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও করোনা মোকাবেলায় নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনার পরিস্থিতি ডাক্তারদের মানবিক দিকটি আবারও নতুন করে দেখতে পেয়েছেন এদেশের মানুষ। বেসরকারি কিছু হাসপাতাল বন্ধ থাকলেও সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীদের সেবা প্রদানের দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
তবে সরকারি নির্দেশনা মানা হচ্ছে না বগুড়ার ধুনট উপজেলায়। করোনাভাইরাস সংক্রামণ আতঙ্কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে দুই দিনের বেশি সময় কোনো রোগীকে ভর্তি রাখছেন না স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও ডাক্তাররা। এছাড়া জরুরি কোনো রোগী এলেই তাকে রেফার্ড করা হচ্ছে জেলা সদরের অন্য হাসপাতালে। সরকারি এই হাসপাতালের এমন চিত্র প্রায় নিত্যদিনের। এ কারণে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধুনট উপজেলার প্রায় ৫ লাখ জনগোষ্ঠীর জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও মাত্র ১০ জন ডাক্তার কর্মরত রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ ডাক্তারই কর্মস্থলে থাকেন না। কিছু ডাক্তার কর্মস্থলে থাকলেও তারা বে-সরকারি ক্লিনিকে রোগী দেখতেই বেশি সময় ব্যস্ত থাকেন। এছাড়া এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২টি অপারেশন থিয়েটার থাকলেও ডাক্তার ও জনবলের অভাবে দীর্ঘদিন যাবত অপারেশন থিয়েটার বন্ধ রয়েছে। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকার যত্রপাতিগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
হাসপাতালে পড়ে আছে অত্যন্ত দামি একটি এক্সরে মেশিন। কিন্তু দক্ষ লোকের অভাবে এটি ব্যবহার করতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া ইসিজি মেশিন ও আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন থাকলেও জনবলের অভাবে মেশিনগুলো দীর্ঘদিন বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে জরুরি সেবা না দিতে পেরে কোনো জরুরি রোগীকে এখানে ভর্তি করানো হয় না। জরুরি রোগী এলে তাকে রেফার্ড করে বগুড়ায় পাঠানো হয়। আর এভাবেই চলছে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা।
ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মিলটন সরদার গণমাধ্যমকে জানান, মূলত করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতেই নাকি স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নির্দেশে রোগীদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ধুনট হাসপাতালের অনেক ডাক্তারই দুপুর ১টার আগেই চলে যান। এ বিষয়ে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে একাধিকবার অবগত করলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। তাই হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিতে বগুড়ার সিভিল সার্জনসহ ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/ এআর