মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: কনের ভাইয়ের ইচ্ছে ছিলো, তার ছোট বোনকে হেলিকপ্টারে চড়িয়ে বিয়ে দিবেন। তাই বোনকে বরের বাড়ি হতে আনতে হেলিকপ্টার নিয়ে বরের বাড়িতে আসেন কনের ভাই সহ তার পরিবার।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু কন্যার পদত্যাগের দাবি মেনে নেয়া যায় না
শনিবার (২৬ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার কাইচাইল গ্রামের কাইচাইল প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নামে হেলিকপ্টার। ওই হেলিকপ্টারে চলে আসেন কনের ভাই কাজী আবীর তার স্ত্রী সহ আরও কয়েকজন বয়স্ক মানুষ।
বাকি কনে বাড়ির আরও ২ শতাধিক লোকজন আসেন বাসে, মাইক্রোবাসে চড়ে। হেলিকপ্টার হতে নেমে তারা আসেন বরের বাড়িতে। বর কাইচাইল গ্রামের মোশাররফ হাওলাদারের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন। ফিলিপাইনে গার্মেন্টস ব্যবসা করেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে সাব্বির হোসেন বড়। তার বড় এক বোন রয়েছে।
পরে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কনে'কে নিয়ে চলে যান বরের ভাই সহ কনের বাড়ি হতে আসা লোকজন।
আরও পড়ুন: বৃদ্ধার গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার
কনে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান কাজী ফুলন এর মেয়ে মরিয়ম আক্তার (সুস্মিতা)।
বরের বাড়ি থেকে কনের বাড়ির দূরত্ব মাত্র সাত কিলোমিটার। তবে বরের মায়ের ইচ্ছা আর কনের ভাইয়ের আবদার বর-বধূ চড়বে হেলিকপ্টার করে। তাদের ইচ্ছে পূরণেই দুই দিনে ৩ লাখ টাকা খরচ করে দিন দুপুরে বরকে কনের বাড়িতে কনের বাড়ি হতে আবার বরের বাড়িতে আসতে হয়েছে আকাশে চড়ে। এর আগে শুক্রবার দুপুরে বর হেলিকপ্টারে চলে যায় কনের বাড়িতে। পরে আবার কনেকে নিয়ে আসেন।
বিয়ের পরে, শনিবার বৌভাত অনুষ্ঠানে বরের বাড়িতে দুপুর ১টা হতেই মানুষের ঢল নামে। বৌভাত অনুষ্ঠানে ২২০০ লোকের আয়োজন ছিল। মেয়ের বাড়ি হতে কনে নিতে আসে দুই শতাধিক লোক। এ নিয়ে দুপুর একটা হতে পাঁচটা পর্যন্ত চলে খাবার আয়োজন।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে বিনামূল্যে ২৫০ রোগীর চিকিৎসা
এ ব্যাপারে কনের বড় ভাই আবির কাজী বলেন, আগে থেকেই আমার ইচ্ছে ছিলো আমার ছোট বোনকে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে দিব। তাই আজ হেলিকপ্টার নিয়ে ছোট বোনকে নিতে আসছি। এর আগে বর শুক্রবার হেলিকপ্টার দিয়ে আমার বোনকে আমাদের বাড়ি হতে তাদের নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বাড়ি বরের বাড়ি হতে মাত্র সাত কিলোমিটার দূরে কিন্তু আমাদের ইচ্ছে অনুযায়ী আমরা হেলিকপ্টারে চড়ে বোনের বিয়ে সম্পন্ন করলাম।
এদিকে, বর সাব্বির হোসেনের মা সাহিদা বেগমরও ইচ্ছা ছিল বড় ছেলের বউ আনবেন হেলিকপ্টারে। সেই ইচ্ছা পূরণ করেছেন শুক্রবার তিনি।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরি
এ ব্যাপারে শাহিদা বেগম বলেন, আমার ইচ্ছা ছিলো আমার বড় ছেলেকে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করাবো। আমি সফলভাবে আমার ছেলেকে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে সম্পন্ন করতে পেরেছি। আমি বর-কনের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।
এদিকে, হেলিকাপ্টার কাইচাল মাঠে নামার সাথে সাথে ওই স্থানে শত শত লোকজনের ভিড় জমে।
কাইচাইল গ্রামের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী নুসরাত বলেন, আমি এর আগে এত কাছ থেকে কখনও হেলিকপ্টার দেখিনি। আজ আমাদের বাড়ির পাশের মাঠে হেলিকপ্টার আসছে তাই আমরা দেখতে আসছি।
আরও পড়ুন: জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে সেবা কার্যক্রম
হেলিকপ্টার চালক ক্যাপ্টেন নাফিস বলেন, হেলিকপ্টার ভাড়ার ব্যাপারটি সাধারণত ডিপেন্ড করে কতটুকু ডিসটেন্স, কতক্ষণ আকাশে উড়বে, কত সময় নিচে থাকলো তার উপরে।
এক ঘন্টা যদি আমাদের হেলিকপ্টার ফ্লাই করি ৮০ হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ হয়। এরপর নিচে ল্যান্ড করে রাখলে প্রথম ঘন্টা ছয় হাজার টাকা তারপরে যত বেশি সময় ল্যান্ড করে রাখে সে অনুসারে একটি ভাড়া নির্ধারণ করে থাকি।
এ ব্যাপারে বরের বাবা মোশারফ হোসেন বলেন, আমার স্ত্রী ও মেয়ের বাবা-ভাইয়ের ইচ্ছা ছিল আমরা হেলিকপ্টারে দিয়ে আমাদের ছেলে-মেয়েদের দিয়ে দিবো। আমরা সুন্দর ও সুস্ঠ রূপে বিয়েটি সম্পন্ন করতে পেরে খুশি।
সান নিউজ/এইচএন