নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনা: খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ৫০৪ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে।
বুধবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে নগর ভবনের শহীদ আলতাফ মিলনায়তনে এ বাজেট ঘোষণা করেন কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ।
২০২০-২০২১ অর্থ বছরে বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০৪ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার টাকা। এর মধ্যে রাজস্ব ব্যয় ১৬৬ কোটি ৯৫ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং সরকারি বরাদ্দ ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা থেকে উন্নয়ন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৭ কোটি ৩৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।
নিজস্ব আয় বৃদ্ধি পরিকল্পনা, সরকার ও বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রতিশ্রুতি এবং জনগণে প্রত্যাশার বিষয়টি বিবেচনা করে এ বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে।
গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৬৫ কোটি ৫৪ লাখ ৩ হাজার টাকা। সংশোধিত বাজেটে এর আকার দাঁড়িয়েছে ৫৮২ কোটি ৭১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৬৭ দশমিক ৩২ শতাংশ।
এবার বাজেটের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরে বলেন মেয়র বলেন, এ বাজেটে নতুন কোনো কর আরোপ করা হয়নি। বকেয়া পৌরকর আদায়, নবনির্মিত সব স্থাপনার উপর প্রচলিত নিয়মে কর ধার্য্য এবং নিজস্ব আয়ের উৎস সম্প্রসারণের মাধ্যমে করপোরেশনের আয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ বাজেটের যথাযথ বাস্তবায়ন হলে নগরবসীর কাঙ্খিত চাহিদা বহুলাংশে পূরণ হবে এবং চাহিদা অনুসারে বরাদ্দ পেলে উন্নয়ন সম্ভব হবে বলে আশা ব্যাক্ত করেন মেয়র।
মেয়র বলেন, এটি একটি উন্নয়নমুখী বাজেট। এ বাজেটে নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে পরিত্রাণ দেওয়ার নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করা হবে। কেসিসি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। কেবল সরকারি বা বিদেশি সাহায্য ও ঋণের ওপর নির্ভরশীল থাকতে পারে না। কেসিসিকে নিজস্ব আয়ের ওপর নির্ভর করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।
কেসিসি মেয়র জানান, কেসিসির নিজস্ব সংস্থাপন ব্যয় মিটিয়ে এবং ব্যয় সংকোচন করে নগরীর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য রাজস্ব তহবিল থেকে মোট ৫১ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ বাজেটে রাজস্ব খাত থেকে উন্নয়ন খাতে ৩৯ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্ধ রাখা হয়েছে। অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট উন্নয়নের পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। মানববর্জ্য উন্নয়ন এবং মশক নিধনের জন্য
কঞ্জারভেন্সি খাতে ৬ কোটি ৯৫ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এডিপির জন্য থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭০ কোটি ২৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। বরাদ্দ থেকে ৪২ কোটি ২৫ লাখ টাকা পূর্ত খাতে, নগরীতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের দায়িত্ব খুলনা ওয়াসার হলেও বিশেষ প্রয়োজনে জরুরি পানির চাহিদা মেটাতে গভীর ও অগভীর নলকূপকে সাবমারসিবল পাম্পে রূপান্তর করতে এ খাতে দুই কোটি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ভেটেরিনারি খাতে ৫০ লাখ টাকা, জনস্বাস্থ্য খাতে ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা, কঞ্জারভেন্সি খাতে ১৫ কোটি ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এডিপিতে দুইটি প্রকল্পে ১৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত ও উন্নয়ন খাতে ৮০ কোটি টাকা এবং মহানগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য ১০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এছাড়া বর্তমানে সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভিন্ন দাতা সংস্থার ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে এবং তিনটি প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে এসব প্রকল্পে ৮৭ কোটি ৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার উন্নয়ন সহায়তা পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।
বাজেট উপস্থাপনের সময় ঢাকা থেকে জুম অ্যাপের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল।
বাজেট অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেসিসির অর্থ ও সংস্থাপন বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও কাউন্সিলর শেখ মো. গাউসুল আজম। উপস্থিত ছিলেন কেসিসির প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী নেতা, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও কেসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সান নিউজ/ এআর