সারাদেশ

বন্যার পানি কমছে, বাড়ছে পানিবাহিত রোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি:

বন্যা কবলিত এলাকায় মানুষের আতঙ্ক এখন পানি বাহিত রোগ। এই সময়ে এটি একটি দুর্ভোগও। এই আতঙ্ক এবং দুর্ভোগ নিয়েই বসবাস করছেন দেশের ৩৩টি জেলার প্রায় ৮ লাখ পরিবারের প্রায় ৫০ লাখ বানভাসি মানুষ। দীর্ঘ ৪৬ দিন পানির নিচে তলিয়ে থাকা কাদা কাদা ঘর, অবিরাম বৃষ্টি তার ওপর পানি বাহিত ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিসসহ নানা ধরনের চর্ম রোগে জর্জরিত এসব বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। ঘরে খাবার নেই, নেই সুপেয় পানীয়। পরপর তিন দফা বন্যায় অনেক টিউবওয়েল নষ্ট হয়ে গেছে। পুকুরেও ঢুকেছে দূষিত পানি। খালে বিলে নদীতে হাওরে এখন পানি থই থই করলেও খাবার যোগ্য পানি মিলছে না কোথাও। কূলকিনারা না পেয়ে এসব পানি খেয়েই পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। সরকারি ত্রাণ সহায়তা কেউ কেউ কিছুটা পেলেও অনেকেই বলছেন, তা তারা চোখেও দেখেননি। বানভাসি মানুষের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন সেন্টার (এনডিআরসিসি) সূত্রে জানা গেছে, ২৫ আগস্ট পর্যন্ত বন্যা কবলিত ৩৩ জেলার ৭ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৮ পরিবারের ৪৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৩৭ জন মানুষ বানভাসি। প্রায় ৮ লাখ পরিবারের ৫০ লাখ মানুষ পানি বাহিত রোগের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন। বন্যার পানিতে ঘর-দুয়ার ভেঙে গেছে, আয় নেই, রোজগারের পথ নাই, ঘরে খাবার নেই—এমন অবস্থায় নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে তারা এখন দিশেহারা। স্থানীয় হাসপাতালেও চিকিৎসা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার ১নং কুলকান্দি ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানায়, এতো লম্বা সময় বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকা ঘরবাড়িতে এখন আর বসবাসের উপায় নাই। ঘরের চাল থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে ঘরদুয়ারের সবকিছুই বদলাতে হবে। পানিতে পচে গেছে সব। ভাঙা বাড়িঘর রোদে শুকায় আর মড়মড় করে ভেঙে পড়ে।

তারা জানায়, বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে ঠিকই, কিন্তু ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এর সঙ্গে আছে আমাশয় এবং জন্ডিস। সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ, জ্বর আর জন্ডিসের একই ওষুধ। ডায়রিয়ার স্যালাইন মাঝেমধ্যে পাওয়া যায়, বেশিরভাগ সময় পাওয়া যায় না। তখন বাইরের দোকান থেকে কিনতে হয়।

একইভাবে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা, কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী, শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলায়ও বন্যার পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার বানভাসি মানুষেরা।

এ প্রসঙ্গে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম তাহের জানিয়েছেন, এখনও তেমন মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। তবে আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া আছে। মেডিক্যাল টিম গঠন করা আছে। যে কোন জরুরি প্রয়োজনে বা পরিস্থিতিতে আমরা চিকিৎসা সেবা দিতে পারবো।

এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ৯৮-এর বন্যার তুলনায় এবার বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম। ওই সময় প্রায় ৪০ জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এবার ৩৩ জেলা। একইভাবে সে সময় প্রায় ৫০ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়, এবার প্লাবিত হয়েছে ৩০ ভাগ এলাকা। সে সময় বন্যা স্থায়ী হয়েছিল ৬৯ দিন, এবার ৪৬ দিন।

তিনি জানান, আমরা রিলিফ বেইজ জায়গা থেকে বের হয়ে দুর্যোগের ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা করছি। এজন্য নদী শাসন, নদী-ভাঙন রোধে নানা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। দেশে আরও ৩ হাজার ১৮৭টি বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র এবং মুজিব কেল্লা নির্মাণ করা হবে। ১১০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, ২০ ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র এবং ৫৭টি মুজিব কেল্লা এক বছরের মধ্যে করার জন্য পরিকল্পনা করেছি।

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

হাতুড়ি দিয়ে রাজমিস্ত্রিকে খুন

জেলা প্রতিনিধি: মুন্সিগঞ্জ জেলার...

ভালুকায় ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে র‍্যালি

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে...

টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বাণিজ্য ম...

ড. ইউনূস-মার্কিন প্রতিনিধিদলের বৈঠক আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরক...

বৃষ্টিতে জনজীবনে ছন্দপতন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভদ্র মাসের শেষ দিনে স্থল নিম্নচাপের প্রভাব...

নারী ভিক্ষুককে কুপিয়ে হত্যা

জেলা প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জে...

পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি: কক্সবাজার জেলার চ...

বজ্রপাতে মৎস্যচাষির মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা জেলার দ...

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজায় ইসরায়েলি...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গুলিতে নিহত ২

জেলা প্রতিনিধি: কক্সবাজার জেলার উ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা