হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রায় ২ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিএনপির অস্থায়ী কার্যলয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছলেও নিরব ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন: প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা, যুবক গ্রেফতার
রোববার (২০ আগস্ট) বিকেল ৫ থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত শহরের শায়েস্তানগরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষে জড়ায় এ দুদল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার বিএনপির সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির প্রতিবাদে রোববার বিকেলে শহরের শায়েস্তানগর পয়েন্টে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। ঘোষণা অনুযায়ী নেতাকর্মীরা বিকেলে সমাবেশ স্থলে জড়ো হন। সমাবেশ শেষে মিছিল বের করা হয়।
মিছিলটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে পৌছুলে ‘জয়বাংলা’ স্লোগান দিতে দিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে হামলা চালায়। তারা অফিসের ফার্নিচার ভাংচুর করে। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দিলে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে
উভয়পক্ষ একে অপরের লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। ফলে আশপাশের দোকানপাঠ বন্ধ হয়ে যায়। পথচারিরা ভয়ে দিকবিদিক ছুটাছুটি করতে থাকেন। ওই এলাকায় বাসাবাড়িতে শিশু ও নারীরা কান্নার রোল শুনা যায়।
এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ নিরব থাকলেও সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে এ্যাপাচি নিয়ে বিপুল সংখ্যক দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে। তারা সংঘর্ষ থামাতে মুহুমুহু টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ছুড়ে সংঘর্ষকারিদের ছত্রভংগ করে দেয়।
টিয়ার গ্যাসের গন্ধে বাসাবাড়িতে থাকা নারী পুরুষ শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। সংঘর্ষে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাথাওয়াত হোসেন সেতু,যুবলীগ নেতা মুসা আহমেদ রাজু, কলেজ ছাত্রলীগ নেতা জয়, শেখ সুমন, বিএনপির নেতা জি কে গাফফার, জি কে মৌওলা, জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সফিকুর রহমান সেতু, ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মাহবুব,যুবদল নেতা দুলাল,ছাত্রদল নেতা ইমন, রোকনসহ শতাধিক আহত হয়।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে হাসনা মওদুদের নেতৃত্বে পদযাত্রা
জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আলমগীর চৌধুরী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশ করেছি। সমাবেশ শেষে শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করি।
এ সময় হঠাৎ বিএনপি নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে আমাদের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী আহত হন। তবে হতাহতের পরিমান কত তা এখনই বলা সম্ভব নয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র জি কে গউছ বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে লাঠিসোটা সহকারে হঠাৎ আমাদের দলীয় কার্যালয়ে হামলা করে।
আরও পড়ুন: টঙ্গীবাড়ীতে বাড়িঘর ভাঙচুর, আদালতে মামলা
অফিসে ব্যাপক ভাংচুর করেছে। আমার বাসায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। পুলিশও তাদের সাথে সংঘর্ষে যোগ দিয়েছে। হামলায় পৌর কাউন্সিলর শফিকুর রহমান সিতুসহ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
সদর মডেল থানার ওসি তদন্ত বদিউজ্জামান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। তবে কি পরিমাণ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে তা এখন বলা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, গত শনিবার বিএনপির পদযাত্রা কর্মসুচীতে পুলিশ ও বিএনপি সংঘর্ষে দুইশতাধিক লোক আহত হয়।
সান নিউজ/এইচএন