এম.এ আজিজ রাসেল, কক্সবাজার : কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়ার ছড়ার পানির কুয়া এলাকায় ইয়াবা লুট নিয়ে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছে অন্তত ৫ জন।
শনিবার (১৩ আগস্ট) ভোর ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভোর ৫টার দিকে সৈয়দ উল্লাহর ফিশিং ট্রলারে প্রায় ৩ লাখ ইয়াবার একটি বড় চালান পানির কুয়া ঘাটের দিকে আসছিল। ইয়াবা বহনের খবর পেয়ে ওই ট্রলার কে ধাওয়া করে মোক্তারের মালিকানাধীন আরেকটি ট্রলার। যা পথিমধ্যে দেখতে পাই পানির কুয়া এলাকার দুধু মিয়া, তোহা ও রিপন। তাঁরাও সৈয়দ উল্লাহ ট্রলারের পিছু নেয়। একপর্যায়ে ইয়াবা বহনকারী সৈয়দ উল্লাহর ট্রলারটি ঘাটে ফিরে ইয়াবা খালাস করার চেষ্টা করে। এসময় মুক্তার ও গোলাম রহমান গ্রুপ এবং দুধু মিয়া ও তোহা গ্রুপ ইয়াবাগুলো লুট করার চেষ্টা করে।
আরও পড়ুন : বান্দরবানে ২৪ পর্যটক উদ্ধার, নিহত ১
এতে সৈয়দ উল্লাহর গ্রুপের খোকন, গফুর, বুড়ুল্লা, রোহিঙ্গা আবদুল গফুর মাঝি ও শহিদ উল্লাহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে লুটকারীদের হামলা করে। এসময় দুধু মিয়া ও রিপন ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়। পরে ইয়াবাগুলো নিয়ে সৈয়দ উল্লাহ ও খোকন গ্রুপের অন্য সদস্যদের নিয়ে নিরাপদে সটকে পড়ে। তবে ধস্তাধস্তির মধ্যে দুধু মিয়া ৭০ হাজার ও তোহা ২০ হাজার ইয়াবা লুট করে নেয়।
ইয়াবা লুটে সংঘর্ষে আহত দুদু মিয়া ও রিপন
এদিকে ইয়াবা লুট নিয়ে সংঘর্ষের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বেলা ১২টার দিকে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে সৈয়দ উল্লাহ ও খোকনের বাড়িতে গেলে পুলিশ কাউকে না পেয়ে চলে আসে।
আরও পড়ুন : নোয়াখালীতে আগুনে পুড়ল ৮ দোকান
এ বিষয়ে দুধু মিয়া বলেন, ভোরে ফিশিং ট্রলার করে আমরা মাছ কেনার জন্য নাজিরারটেক যাচ্ছিলাম। ওই সময় দেখতে পাই সৈয়দ উল্লাহ একটি ফিশিং ট্রলারকে মুক্তারের ট্রলার ধাওয়া করছে। পরে সৈয়দ উল্লাহর ট্রলার থেকে একটি বস্তা কুলে আনার সময় ইয়াবাগুলো দেখতে পাই। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। আমরা দেখতে গেলে আমাদের উপরও হামলা করে সৈয়দ উল্লাহ ও খোকনের নেতৃত্বে ইয়াবা কারবারীরা। ইয়াবা লুটের সাথে আমরা জড়িত নেই। এ বিষয়ে আমরা সদর মডেল থানায় অভিযোগও দায়ের করি।
জানা যায়, সৈয়দ উল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে। তাঁর ইয়াবা পাচারের প্রধান রুট নৌপথ। তাঁর বাড়ির পাশে ঘাট থাকার সুবাধে সে নিরাপদে ইয়াবার চালান খালাস করে। অল্প সময়ের মধ্যে সৈয়দ উল্লাহ হয়ে উঠে ইয়াবা কিং। কতিপয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন : রাতে মদ পান, সকালে মিলল মরদেহ
২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বলেন, এলাকার মানুষের মাধ্যমে আমি ঘটনাটি শুনি। পরে পুলিশের সাথে আমি ঘটনাস্থলে যায়। আসলে সৈয়দ উল্লাহ একজন চিহ্নিত ইয়াবা কারবারী। সে অনেক বার জেল খেটেছে। তার পরিবারের অন্যরাও মাদক কারবারের সাথে জড়িত। অনেকে এখনো জেল হাজতে রয়েছে। মাদক কারবারিদের নিমূর্লে অতীতের ন্যায় আমার শক্ত অবস্থান থাকবে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. রফিক উদ্দিন বলেন, খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে শিগগিরই। পুলিশেল অভিযান অব্যাহত আছে।
সান নিউজ/জেএইচ