নিজস্ব প্রতিনিধি: টানা ভারী বর্ষণ, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যা হওয়ায় বেশ কিছুদিন কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে যান চলাচল বন্ধ ছিলো। তবে পূর্ণিমার জোয়ার ও কক্সবাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় যান চলাচল শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে ২ উপজেলাকে গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা
বুধবার (৮ আগস্ট) এনা পরিবহণের কক্সবাজারের ম্যানেজার আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন অবস্থার উন্নতি হওয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সীমিত আকারে যান চলাচল শুরু হয়েছে। তবে রাস্তা থেকে পুরোপুরি পানি না নামায় বাঁশখালী সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন জানান, চকরিয়া ও পেকুয়ার উপকূলীয় বেশ কিছু এলাকায় পরিস্থিতি এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে। পানি কমলেও লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।
ম্যানেজার আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, বুধবার সকাল থেকে এনা পরিবহন কক্সবাজার-চট্টগ্রাম সড়কে চলাচল শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবারও এস আলম, সৌদিয়া, মারছাসহ অন্যান্য যানবাহনগুলো এ সড়কে যাতায়াত করবে। তবে হাইওয়ে থেকে পুরোপুরি পানি নেমে না যাওয়া, বেশ কিছু অংশে রাস্তা ভাঙা হওয়ায় বাসগুলো বাঁশখালী হয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে যাতায়াত করছে।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জের শিবালয়ে ইয়াবাসহ গ্রেফতার ১
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, চকরিয়া ও পেকুয়ার ২৫ ইউনিয়ন এবং পৌরসভার বেশিরভাগ এলাকা এখনও পানিতে কবলিত। চকরিয়ায় ৩ লাখ ৯০ হাজার ৫০০ জন ও পেকুয়ায় ৮৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। ঐসব এলাকাগুলোতে শুকনো ও রান্না করা খাবারসহ বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম জানান, গত সোমবার (৭ আগস্ট) থেকে কক্সবাজারে বন্যা শুরু হয়। জেলার ৯ উপজেলার ৬০ ইউনিয়নের প্রায় ৩ লাখ মতো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার বেশিরভাগ নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। গত ৫ দশকের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বড় বন্যা দেখা দিয়েছে। আজ সকাল থেকে ভারি বৃষ্টি না হওয়ায় পানি কমতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: শার্শায় ২৭ গৃহহীন পরিবার পেল ঘর
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেছেন, বুধবার (৯ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ মানুষ পানিবন্দি আছে। তার মধ্যে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরো জানান, বন্যায় ৫৯ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। দূর্গত এলাকাগুলোকে ৫৮ মেট্টিক টন চাল ও নগদ ৭ লাখ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে প্রায় ৩৭ হাজার ৫০০টি। ২০৮ আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৩৫ হাজার ৭৭৫ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
সান নিউজ/এএ