নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরিশাল: টানা পাঁচদিন দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সোমবার (২৪ আগস্ট) নিচে নেমে গেছে। বিষয়টিকে অত্যন্ত ইতিবাচক বলে মনে করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশালের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাসুম।
তিনি বলেন, পানি দীর্ঘস্থায়ী না হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক কম হয়েছে। যদিও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে গত পাঁচদিন আপেক্ষিকভাবে যেভাবে পানি প্রবাহিত হয়েছে, তাতেই ইতোমধ্যে ফসলের ক্ষেত, মৎস্যঘের ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষতি হয়েছে।
বন্যায় কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা পরিমাপে কাজ করছে বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মৎস অধিদপ্তর ও সড়ক বিভাগ।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সর্বশেষ রোববার (২৩ আগস্ট) বিভাগের প্রধান প্রধান নদীর মধ্যে কয়েকটির পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। কিন্তু সোমবার কোনো নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। বিভাগের জেলাগুলোতে গত ২০ আগস্ট থেকে পাঁচদিনে পর্যায়ক্রমে যে পরিমাণ পানি উঠেছে, তা সুপার সাইক্লোন আম্পানের জলোচ্ছ্বাসের চেয়ে বেশি ছিল বলে জানিয়েছেন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া।
তিনি জানান, বিভাগের বরিশাল, বরগুনা, ঝালকাঠি ও ভোলা জেলায় বন্যা পরিস্থিতি ছিল। তবে শনিবার (২২ আগস্ট) রাত থেকে নদীর পানি ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করায় ঝুঁকিও কমে আসতে থাকে।
সর্বশেষ সোমবার দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বিভাগের ৪২টি নদীর মধ্যে আজ পর্যন্ত ছয়টি নদীতে পানিপ্রবাহ বেশি ছিল। তবে নদীগুলো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। এর মধ্যে বরিশাল জেলার কীর্তনখোলা নদীর সর্বোচ্চ পানিপ্রবাহ ছিল ২.১৭ সেন্টিমিটার। এই নদীর বিপৎসীমার পরিমাপ ২.৫৫ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ০. ৩৮ সেন্টিমিটার নিচ থেকে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার সুরমা-মেঘনার পানি প্রবাহিত হচ্ছে ৩.৫৫ সেন্টিমিটার। ভোলা জেলার তেঁতুলিয়া নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে ২.৬৬ সেন্টিমিটার উচ্চতায়, যা বিপৎসীমার ০.২৪ সেন্টিমিটার নিচে। বরগুনার বিষখালী নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১.৩৮ সেন্টিমিটার উচ্চতায়। পাথরঘাটা উপজেলার বিষখালী অংশে পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১.৫৫ সেন্টিমিটার উচ্চতায় এবং আমতলী উপজেলার পায়রা/বুড়িশ্বর নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১.৬০ সেন্টিমিটার উচ্চতায়।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা স্পষ্ট লঘুচাপে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে দক্ষিণাঞ্চলে পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। এবারের বন্যায় ছয় জেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সান নিউজ/ এআর