কামরুজ্জামান স্বাধীন, উলিপুর, (কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রামের উলিপুরে আমন মৌসুমে খরার কবলে পড়েছে কৃষক। বর্ষার মাস আষাঢ়-শ্রাবন হলেও কাঙ্খিত বৃষ্টির দেখা নেই এ অঞ্চলে। এ অবস্থায় কৃষকের আমন চাষ ব্যাহত হওয়াসহ উৎপাদন ঝুকিতেও কৃষক। আমন চাষে কৃষকদের ভরসা এখন ভূগর্ভস্থ পানি। এতে খরচও বাড়ছে কৃষকের।
আরও পড়ুন : মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে ভোট দিতে উদগ্রীব
বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মৌসুমের শুরু থেকে কৃষকরা গভীর, অগভীর সেচ দিয়ে আমন চাষে সময় পাড় করছেন। এদিকে ঘনো ঘনো লোড শেডিংয়ের কারণে সেচ কাজও ব্যাহত হচ্ছে। বৃষ্টির অভাবে জমিতে সেচ দিতে না পারায় আমনের ক্ষেত ফেটে যাচ্ছে। ফলে আমন ক্ষেত নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন কৃষক।
উপজেলা কৃষি অধিদফতর থেকে জানা গেছে, এই উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ২৪ হাজার ৫শত ৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ২৫ শতাংশ জমিতে ধানের চারা লাগানো হয়েছে। এছাড়াও আমন চাষের জন্য ১ হাজার ১শত ৮০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরী করা হয়েছে। সেচের জন্য মাঠে ১১৭টি গভীর নলকুপ ও ২০০০টি অগভীর নলকুপ চালু রয়েছে।
আরও পড়ুন : গার্ডার লঞ্চিং মেশিন পড়ে নিহত ১৬
কৃষি বিভাগ ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক বিঘা (৩৩শতক) জমিতে বিদ্যুত ও ডিজেল চালিত সেচ যন্ত্র দিয়ে সেচ দিতে বর্তমানে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হচ্ছে। আমনের চারা লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুত ও খরার কবলে পড়া আমনের চারা বাঁচাতে ইতোমধ্যে দুই থেকে তিনবার সেচ দিতে হয়েছে। চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাত না হলে কমপক্ষে আরও ছয় বার সেচ দিতেও হতে পারে। সেই হিসাবে উপজেলার ২৪ হাজার ৫শত ৫০ হেক্টর আমনের ফসল রক্ষায় এবার সেচের খরচ বাবদ ব্যয় হবে প্রায ৭ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
উলিপুর পৌরসভার নারিকেল বাড়ী গ্রামের হাছান আলী, রমজান আলী বলেন, শ্রাবন মাস জুরে এলাকায় বৃষ্টি হয়নি। খরার কারণে চারা লাগানোর জন্য প্রস্তুত করা জমির মাটি ফেটে চৌচির হয়েছে। যেসব জমিতে চারা লাগানো হয়েছে, পানির অভাবে সেসব জমির চারা মরে যাচ্ছে। খরার কারনে মাটি শুকনো কাঠের মতো হয়ে থাকায় সেচ দিয়ে মাটি ভেজাতে অনেক বেশী পানি লাগছে। একদিকে খরা অন্যদিকে লোডশেডিং চলায় খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন : যুক্তরাষ্ট্র খুনিকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে
ধামশ্রেনী কুড়ার পাড় এলাকার কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, প্রতি বছরই এ সমযে বৃষ্টির পানিতে আমনের চারা রোপন করি। এবছর বৃষ্টি না হওয়াতে এখনও আমনের চারা লাগাতে পারিনি। কালপানি বজরা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিয়ে জমিতে চারা লাগানোয় খরচ বাড়লেও উপায় নাই, কারন হিসেবে বলেন আমরা কৃষকের সন্তান কৃষক জমি ফেলে রাখতে পারি না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান, আমনের মৌসুম কেবল শুরু হয়েছে। পুরো আগষ্ট মাস জুড়ে আমনের চারা লাগানো যাবে। ইতিমধ্যে ২৫ শতাংশ জমিতে চারা লাগানো হযেছে। আশা করছি সঠিক সমযে আমনের চারা লাগানো সম্ভব হবে। তবে যেসব কৃষক সেচ দিযে চাষাবাদ করছেন তাদের খরচ বাড়বে।
সান নিউজ/এমআর