জেলা প্রতিনিধি, পাবনা : বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে আর্থিক বৈষম্য দূর করা, পর্যায়ক্রমে সকল বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাকে জাতীয়করণ করা এবং স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো চালু করা, সকল এমপিওভুক্ত বেসরকারী স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের চাকুরি জাতীয়করণ করাসহ বেশ কয়েক দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ শুরু
শুক্রবার (২৮ জুলাই) পাবনা শহরের একটি রেস্টুরেন্টে আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন পাবনা জেলা শাখার ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের দাবি-দাওয়া জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সরকারের অধীনে দু'টি শিক্ষার শিক্ষাধারা বেসরকারি শিক্ষা হিসেবে চালু আছে। একদিকে সাধারণ শিক্ষা তথা- স্কুল কলেজ অপরদিকে আলিয়া মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা। উভয় শিক্ষা আজও অবহেলিত, বঞ্চিত এবং উপেক্ষিত। অতীতে সকল সরকারের নিকটই শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও শিক্ষা আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের অধিকার নিশ্চিত করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে আন্দোলন চলছে। শিক্ষকদের এই দাবি মেনে নেওয়াই স্বাভাবিক। আমরা লক্ষ্য করছি দাবি মেনে নেয়া তো দুরের কথা উল্টো তাদের উপর হামলা করে আহত করা হয়েছে। যার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। শিক্ষকরা হলো জাতি গড়ার কারিগর। আর এই সকল শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখে আদর্শ জাতি গঠন করা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন : ফিলিপাইনে নৌকাডুবি, নিহত ২৫
তারা আরও জানান, বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ২০ হাজার ৯৬০টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে (স্কুল ও কলেজ মিলিয়ে) মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পড়ানো হয়। এর সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৬৮৪টি, বাকি ২০ হাজার ২৭৬টি বেসরকারি সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মাধ্যামিক স্তরের এসব প্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষার্থী ১ কোটি ১ লাখ ৯০ হাজার ২২ জন। আরও শিক্ষক আছেন পৌনে তিন লাখের মতো। এসব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অধিকাংশই এমপিওভুক্ত। অর্থাৎ এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে বেতনের মূল অংশ সহ কিছু ভাতা পান।
সরকারি শিক্ষকরা তাদের মূল বেতনের ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া পান। আর এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পান এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া আর চিকিৎসা ভাতা পান ৫০০ (পাঁচ শত) টাকা মাত্র।
আরও পড়ুন : বৃষ্টিতে ভিজে আ’লীগের শান্তি সমাবেশ শুরু
বর্তমান সময়ে এই টাকা দিয়ে চলা কছু কঠিনই নয় অসম্ভব বটে। এই বাড়ি ভাড়া একটি যৌক্তিক হারে বৃদ্ধি করা দরকার। আর সরকারি শিক্ষা উৎসব ভাতা পান মূল বেতনের শতভাগ। এমপিও শিক্ষকরা পান মাত্র ২৫%। এই ভাতা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য শতভাগ করতে হবে।
আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন পাবনা শাখার সেক্রেটারি ড. মো: ইদ্রিস আলী বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক সিংহভাগ দায়িত্ব পালন করছে। অথচ তাদের এই অসামান্য অবদানে পদ বিন্যাসের মাধ্যমে সম্মান দেখাচ্ছে না, আর্থিক স্বীকৃতিটা যেন তাদের উপর দয়া বা অনুগহ মনে করা হচ্ছে। এমনকি এ বিষয়ে কথা বলারও সুযোগ দিচ্ছে না এবং সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
আরও পড়ুন : মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের ফাঁসি কার্যকর
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন পাবনা জেলা শাখার সেক্রেটারী ড. মোহাম্মদ ইদ্রিস, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক পরিষদ পাবনা জেলা শাখার সভাপতি রফিকুল ইসলাম, মাধ্যমিক শিক্ষক পরিষদ পাবনা জেলা শাখার সভাপতি শিহাবুল আলম, কারিগরি শিক্ষক পরিষদ পাবনা শাখার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ফরিদুল হাসান, বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাইভেট স্কুল পরিষদ পাবনার সভাপতি মাহফুজুর রহমান, মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ পাবনার সভাপতি আব্দুল লতিফ, স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি আব্দুল মমিন, কিন্ডার গার্টেন শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মঞ্জিল হকসহ প্রমুখ।
সান নিউজ/এমআর