সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে স্ত্রীর পৈত্রিক সম্পত্তি স্বামীর নামে লিখে না দেওয়ায় নাসিমা খাতুন (৩০) নামের এক গৃহবধূকে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী বিরুদ্ধে। গৃহবধূর অভিযোগ, স্বামীর নির্যাতন করে তার দুটি দাঁত ভেঙে দিয়েছে। এ ছাড়া সারা শরীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত করেছে তার স্বামী। সিগারেটের আগুন দিয়ে ছ্যাঁকাও দেওয়া হয়েছে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে।
এ ঘটনার পর নাসিমার প্রতিবেশীরা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে তাড়াশ উপজেলা ৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওই গৃহবধূ সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তাড়াশ সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের মো. মজিবর হোসেনের মেয়ে নাসিমা খাতুনের ১৪ বছর আগে বিয়ে হয় দক্ষিণ মথুরাপুর গ্রামের মমতাজ আলীর সাথে। নাসিমার বাবা-মা মারা যাওয়ার পর তিনি পৈত্রিক সূত্রে এক বিঘা জমির মালিক হন। কিন্তু নাসিমার স্বামী বিভিন্ন সময়ে স্ত্রীর ওই এক বিঘা জমি তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এতে রাজি না হওয়ায় শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন স্বামী মমতাজ আলী। ফলে নিরুপায় হয়ে এক পর্যায়ে সে দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন নাসিমা।
প্রতিবেশীরা জানান, গত শনিবার (২২ আগস্ট) রাতে নাসিমার স্বামী বোয়ালিয়া গ্রামে নাসিমার বাবার বাড়িতে এসে জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিলে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে মমতাজ উদ্দিন ঘুষি মেরে নাসিমার দুটি দাঁত ভেঙে দেন। চাকু দিয়ে আঘাত করে শরীর বিভিন্ন স্থানে। মুখে কাপড় গুজে দিয়ে সিগারেটের আগুনের ছ্যাঁকা দেন। এসময় বাচ্চাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে মমতাজ উদ্দিন পালিয়ে যায়।
তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জামাল মিয়া বলেছেন, নাসিমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তার শরীরে যে ধরণের আঘাত রয়েছে তার জন্য উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার ওসি মো. মাহবুল আলম বলেন, ভিকটিমের আগে চিকিৎসা দরকার। বিধায় তাকে চিকিৎসা নিতে বলেছি। মামলা করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে চিকিৎসাধীন নাসিমা খাতুন জানান, তার স্বামী একজন মাদকাসক্ত। নেশার টাকার জন্যই তার উপর এ ধরনের নির্যাতন প্রায়ই চালিয়ে আসছেন। চিকিৎসা শেষে তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন।