গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: গাইবান্ধায় ১২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদানসহ প্রশাসনিক কার্যক্রম। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিনেও প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় সহকারী শিক্ষককে একই সঙ্গে দুই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
আরও পড়ুন: গ্রামের ভোগান্তি দূর করতে পাঁকা রাস্তা নির্মাণ
শূন্য পদ থাকা বিদ্যালয়গুলোতে দ্রুত প্রধান শিক্ষক নিয়োগের দাবি করেন শিক্ষক, অভিভাবকসহ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগণ। গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি, সাদুল্যাপুর, পলাশবাড়ী ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ১ হাজার ৪৬৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
উক্ত বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ১২০টি বিদ্যালয়ে ১২০ জন প্রধান শিক্ষক ও ১৭১ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। গাইবান্ধা সদরের জুবীলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট নিরঞ্জন সাহা বলেন, এ বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের শূন্যতায় শিক্ষার্থী ভর্তি কমে গেছে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এসব বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে চান না।
বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো সরকারিকরণের ফলে আগের শিক্ষকের সঙ্গে নিয়োগ নিয়ে মামলা জটিলতা, অবসর গ্রহণসহ নানা সমস্যার কারণে প্রধান শিক্ষকের ওইসব পদ শূন্য রয়েছে।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে ২ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা
গাইবান্ধা সদর উপজেলার পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইকবাল মুনছুর আহম্মেদ বলেন, বিদ্যালয়ের জন্য সময় দিলেও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে পারি না। এ বিদ্যালয়ের নারী শিক্ষকের সংখ্যাই বেশি। বিদ্যালয় চলাকালীন এলাকার মাস্তান, মাদকসেবীর ভয়ে শিক্ষকরা তটস্থ থাকেন। তারা কিছু বলতে সাহস পান না। ফলে রাতে মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয় বিদ্যালয় চত্ত্বর।
ফুলছড়ির ধুতিচোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার হামিদুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় ছাত্রছাত্রীও বিদ্যালয়ে আসতে চায় না। শিক্ষকরাও খেয়ালখুশি মতো বিদ্যালয় চালান।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পোড়ার চরের রেজাউল মেম্বার বলেন, চরাঞ্চলের অন্তত ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো যেমন নড়বড়ে, পড়ালেখা এবং শিক্ষকগণও তেমন। শিক্ষকরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না। প্রধান শিক্ষক না থাকলে তো কথাই নেই। সেদিন বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা এলেও আসেন না শিক্ষকরা।
আরও পড়ুন: পাওনা টাকা চাওয়ায় নির্যাতন, যুবকের আত্মহত্যা
গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা চরাঞ্চলে মোটেও ভালো নয়। প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে তারা সবাই থাকেন শহরে। দু-একজন স্থানীয় শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়গুলো খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলে। যেসব বিদ্যালয়ে পদ শূন্য রয়েছে সেখানে জরুরি ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক ও জনবল নিয়োগ করে সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন।
গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে। নিয়োগ দিলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকভাবে চলবে।
সান নিউজ/এইচএন