নিজস্ব প্রতিনিধি:
গত কয়েক দিনে টানা বষর্ণে সাতক্ষীরা জেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। সাতক্ষীরা জেলা আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, শুক্রবার (২১ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৮৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। এবছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে শনিবার (২২ আগস্ট)।
শনিবার সাতক্ষীরা পৌর এলাকাসহ শহরের বেশিরভাগ রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। কোথাও হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি। ফসল ও কয়েক হাজার একর চিংড়ির ঘের তলিয়ে গেছে। জেলার নিম্নাঞ্চলের হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শতাধিক মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ঘের মালিকরা। কয়েকশ’ পানের বরজ পানির নিচে।
সাতক্ষীরা পৌর এলাকার পলাশপোল, কামালনগর, মধুমলোর ডাঙ্গী, বকচরা, রসুলপুর, পুরাতন সাতক্ষীরা, রথখোলার বিল, ইটাগাছাসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তা-ঘাট, বসতবাড়ি, ফসলি জমি, পুকুর, ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার মানুষজন ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন। এছাড়া, তালা, পাটকেলঘাটা, কলারোয়া, দেবহাটা, কালীগঞ্জ প্লাবিত হয়েছে।
শুধু তাই নয়, সাগরে লঘুচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানির উচ্চতা অধিক পরিমাণ বেড়ে নদীর পানি বিপদসীমা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এবং আম্পানের সময়ে সাতক্ষীরা আশাশুনি ও শ্যামনগরের ভেঙে যাওয়া বাঁধে ফের ভেঙে আশাশুনির প্রতাপনগর, শ্রীউলা এবং শ্যামনগরের কাশিমাড়ি ও গাবুরা ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে উপকূলে মানুষের বসতবাড়ি পাশাপাশি রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়। শুক্র ও শনিবার দিনভর বৃষ্টির কারণে আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা, সূর্যের আলো কোথাও দেখা যায়নি।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, নিম্নচাপের কারণে গত কয়েকদিন অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে। সাতক্ষীরা সুন্দরবন সংলগ্ন এবং সব নদীগুলোতে জোয়ারের চেয়ে ২ ফুটের বেশি উচ্চতার জোয়ার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই কয়েক দিনের মধ্যে সবচেয়ে বৃষ্টিপাত হয়েছে শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত। এসময় ৮৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি অধিদফতরের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জেলার ৮৫ হাজার হেক্টর জমির রোয়া আমন ডুবে গেছে এবং কিছু মৌসুমি শাক-সবজি ও কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে।