নিজস্ব প্রতিনিধি:
জামালপুরের বকশীগঞ্জে বাট্টাজোড় নগর মামুদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা ২৩ মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। ফলে হতাশায় পড়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারীরা।
এদিকে বিদ্যালয় প্রদত্ত বকেয়া বেতন-ভাতা চাইতে গেলে উল্টো শিক্ষকদের সঙ্গে অশালীন আচরণ, হুমকি, দুর্ব্যবহার ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক সহিজল হকের বিরুদ্ধে। নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম হ-য-ব-র-ল অবস্থায় পড়েছে।
লিখিত অভিযোগ ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে বিদ্যালয়টির শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ না করে নানা টালবাহানা করছেন প্রধান শিক্ষক সহিজল হক।
গত ১৫ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রাতিষ্ঠানিক বকেয়া বেতন ভাতা ও আয় ব্যয়ের হিসাব চাইতে গেলে শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ’সহ নানান হুমকি-ধমকি প্রদান করেন প্রধান শিক্ষক।
এ নিয়ে গত ১৭ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, নোট গাইডের কমিশন বাণিজ্য, অর্থ আত্মসাৎ, ফরম ফিলাপের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে চাঁদা আদায়’সহ বিভিন্ন অভিযোগে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৮ সহকারী শিক্ষক।
এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের শিক্ষা ও কল্যাণ শাখা থেকে প্রধান শিক্ষক সহিজল হকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সত্যতা যাচাই করে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করায় ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিনকে লাঞ্ছিত ও প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়া হয়। হুমকির বিষয়ে রুহুল আমিন গত ১১ মার্চ বকশীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ।
ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানান, প্রধান শিক্ষকের কারণে বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তিনি নিজের দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় পেশী শক্তির ব্যবহার করছেন। এতে করে সাধারণ শিক্ষকরা চরম হুমকিতে রয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে বাট্টাজোড় নগর মামুদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহিজল হকর সঙ্গে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, গত বার্ষিক পরীক্ষার সময় আমি বিদ্যালয়ে না থাকায় কতিপয় শিক্ষক সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি নিয়ে বিদ্যালয়ে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এ কারণে বিদ্যালয়ের ফান্ড না থাকায় শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
জামালপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তারী ইভা জানান, এসব বিষয়ে শিক্ষকদের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রধান শিক্ষককে ডেকে বিষয়টি সমাধান করা হবে।