রাকিব হাসনাত, পাবনা: পাবনার আতাইকুলা থানার চাঞ্চল্যকর আবুল কালাম হত্যা মামলায় ৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু
একই সঙ্গে এ ছাড়া প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। এছাড়াও অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় একজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
রোববার (৯ জুলাই) বিকেলে পাবনা জেলার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজের বিচারক বেগম শামীম আহমেদ এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আতাইকুলা থানার শ্রীকোল গ্রামের মো. মোতাহার হোসেন, মো. সাইদুল ইসলাম, আলাই, আক্কাছ আলী ফকির, শাহিন, রমজান আলী প্রামানিক, মো. সাইফুল ইসলাম ও আতাউর রহমান। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামী কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। দন্ডপ্রাপ্ত মো. সাইদুল ইসলাম ও মো. সাইফুল ইসলাম হত্যাকান্ডের পর থেকেই পলাতক রয়েছেন।
এ ঘটনায় জড়িত প্রমানিতে না হওয়ায় শ্রীকোল দিয়ারপাড়ার আবুল কাশেম খানের ছেলে মোজাফফর হোসেন খানকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য অত্যন্ত লজ্জাকর
আদালত সুত্র জানায়, পাবনার আতাইকুলা থানার শ্রীকোল গ্রামের সুরুজ আলীর পিতা আবুল কালাম তার পৈত্রিক সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য দন্ডপ্রাপ্তদের সঙ্গে অলিখিত চুক্তিবদ্ধ হন। এ জন্য দন্ডপ্রাপ্তরা এক লাখ টাকা দাবি করে। আবুল কালাম ৪০ হাজার টাকা অগ্রিম প্রদান করেন বাকী ৬০ হাজার টাকা জমি উদ্ধারের পর দেওয়া হবে বলে জানান। এতে দন্ডপ্রাপ্তরা ক্ষুব্ধ হন। কালামকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ২০১৬ সালের ২৪ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দন্ডপ্রাপ্তরা আবুল কালামকে হত্যার উদ্দেশ্যে শ্রীকোল পশ্চিমপাড়ায় কৌশলে ডেকে নিয়ে আসে এবং এক কোপে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।
পরে এ ব্যাপারে আবুল কালামের ছেলে সুরুজ আলী বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সাক্ষী প্রমান শেষে পাবনার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ বেগম শামীম আট জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একজনকে খালাস প্রদান করেন ও প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক।
সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ খান রতন ও আসামী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহজাহান আলী খান।
আরও পড়ুন: খুলনায় বাড়ছে ডেঙ্গু
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মোতাহার হোসেনের ভগ্নিপতি আলম প্রামানিক বলেন, এ ঘটনায় আসামিরা জড়িত না থাকলেও ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। ২০১৬ সালের ইউপি ভোটের সময় নৌকার প্রার্থী রইচ উদ্দিন খান ও বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুস মুন্সীর নির্বাচনি জনসভা চলাকালীন সময়ে কে বা কাহারা তাকে হত্যা করে কেউ বলতে পারেনি।
সাক্ষদাতারা মিথ্যা কথা বলেছে। আমরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। ইনশাআল্লাহ ন্যায় বিচার পাবো।
রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ খান রতন বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা আদালতের এই আদেশে (রায়) খুশি।
তবে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাজাহান আলী খান। তিনি বলেছেন, এই রায়ের মাধ্যমে আমাদের মোক্কেল ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করি- সেখানে আমাদের মোক্কেল ন্যায় বিচার পাবেন।
সান নিউজ/এনকে