মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালের ছাদে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে ওয়ার্ড ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে সদর থানায় পৌর ২ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক মো: শেখ শাকিলকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে হাসপাতালে পুরাতন ভবনের ছাদে এ ঘটনা ঘটে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
শাকিল সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের চরমুশুরা এলাকার হাবিবুরের পুত্র। তারা পরিবার সহ পৌরসভার দুধবাজার সংলগ্ন খালইষ্ট এলাকার একটি আবাসিক ভবনের ভাড়াটিয়া।
জানা গেছে, ধর্ষিতার বাবা রিকশা চালক গত ১৫ বছর আগে অকালে মারা যান। অসহায় মা শিশু মেয়েকে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঝিয়ের কাজ করতো। পরে, মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পারটাইম আয়ার কাজ নেন। মাসিক ৩ হাজার টাকায় এক মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে কোনো মতে অমানবিক জীবন যাপন করছেন। এক সময় পঞ্চসার এলাকার নতুনগাঁও গ্রামের একটি ঝুঁপরি ঘরে ভাড়া থাকতো। পরে পৌরসভাধীন শিলমন্ডি এলাকায় নানাবাড়িতে ছোট ছাপড়া ঘরে থাকে তারা।
আরও পড়ুন: পাঁচ দেশে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত
এজাহারসূত্র ও ভুক্তভোগী কিশোরী জানায়, তার মা হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হওয়ায় প্রায়ই হাসপাতালে যাওয়া আসা ছিল তার। মঙ্গলবার রাতে মায়ের জন্য হাসপাতালে অবস্থান করছিল সে। একই সময় ৪-৫ জন সহযোগীকে নিয়ে হাসপাতালে অবস্থান করছিলেন স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা শাকিল।
পরে, রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে লোকজন কমে আসলে প্রয়োজনীয় কথা আছে বলে কিশোরীকে ডেকে সিঁড়ির সামনে নিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেয় শাকিল। এতে অস্বীকৃতি জানালে একপর্যায় ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে টেনে হাসপাতালের ছাদে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে বিষয়টি কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। ঘটনার পর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেয় ভুক্তভোগী।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে মেয়েটি তার মায়ের সঙ্গে অভিমান করে পরিচিতদের সঙ্গে হাসপাতালে থাকার জন্য চলে আসে। রাত ১২ টার দিকে মেয়েটি হাসপাতালের দুইতলায় উঠার সিঁড়িতে পরিচিত দুই ছেলের সঙ্গে কথা বলছিল। সে সময় শেখ শাকিল সেখানে উপস্থিত হয়ে ওই দুই ছেলেকে ভয় দেখিয়ে তারিয়ে দেয়। পরে মেয়েটিকে হাসপাতালের ছাদে নিয়ে ধর্ষণ করে।
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে, শেখ শাকিলের মুঠোফোনে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থান্দার খাইরুল হাসান বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি জানতে পারি। তারপরই মেয়েটির পরিবারকে আইনগত সহয়তা করি। রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তরুণীর মা বাদি হয়ে শাকিলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে। পুলিশ আসামীকে গ্রেফতার অভিযান শুরু করেছে।
সান নিউজ/এনকে