জেলা প্রতিনিধি : দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলা সুনামগঞ্জে চলছে ভারী বৃষ্টিপাত। থামার কোনো লক্ষণ নেই। অন্যদিকে সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে সুরমা, কুশিয়ারা ও যাদুকাটা নদীসহ প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বেড়েছে। আরও দুই-তিন দিন এভাবে চলতে থাকলে বন্যার কবলে পড়বে জেলার ২০ লাখেরও বেশি মানুষ।
আরও পড়ুন : গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে সুরমা, যাদুকাটা, রক্তি নদীর পানি বাড়লেও বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবো জানায়, জুনের ১০ তারিখ থেকে সুনামগঞ্জে মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। গেল এক সপ্তাহে চেরাপুঞ্জিতে ৭২০ ও সুনামগঞ্জে ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। উজানের ঢল আর ভারি বর্ষণে সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি চার মিটার বেড়েছে। হু হু করে পানি ঢুকছে বিশাল হাওড়ে। ঢলের পানিতে পূর্ণ হয়ে ওঠেছে হাওড়।
আরও পড়ুন : তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে
সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী নিম্নাঞ্চলে এরইমধ্যে ঢলের পানি ঢোকায় ও সব ধরনের রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ৩ লাখেরও বেশি মানুষ। এমনকি অনেকেই এরইমধ্যে বসতভিটার সব আসবাবপত্র নৌকায় করে উঁচু স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।
নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা জানান, নদীর পানি বাড়ায় প্রতিনিয়ত আতঙ্কে রয়েছেন তারা। স্থানীয় বাসিন্দা ফজু আহমেদ বলেন, যেভাবে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত আছে আমরা খুব আতঙ্কে আছি।
নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দা পেয়ারা বেগম বলেন, গত বছর বন্যার পানিতে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। সেজন্য এ বছর পানি পুরোপুরি আসার আগে ঘরের আসবাবপত্র নৌকায় করে নিয়ে উঁচু স্থানে নিয়ে যাচ্ছি।
আরও পড়ুন : পোশাক শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
তবে স্বস্তির বাণী শোনাতে পারেননি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টা সুনামগঞ্জে অতিভারী বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে। এতে সুনামগঞ্জের সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জে ২০২২ সালের এ সময় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, সুনামগঞ্জে ওই বন্যায় ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন; মারা যান ১৫ জন। আর বিধ্বস্ত হয় ৫০ হাজার ঘরবাড়ি।
সান নিউজ/জেএইচ