সোলাইমান ইসলাম নিশান : লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম মিরাজ হত্যা মামলায় ১২ আসামির সবাই খালাস পেয়েছেন।
আরও পড়ুন : জামিন পেলেন নোবেল
সোমবার (২২ মে) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌসুলী পিপি অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- মুসলিম, তানজিল হায়দার রিয়াজ, জাহাঙ্গীর, নুরে হেলাল মামুন, রিয়াজ, মোস্তফা কামাল, হারুন প্রকাশ ডাল হারুন, জহির সর্দার, রফিক উল্যাহ সোহাগ, রাকিব হোসেন রাজু, মাসুদ ও সোহেল।
আরও পড়ুন : মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৫৭
আদালত ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে কেরোয়া ইউনিয়নের ভাঁটের মসজিদের অদূরে নির্জন এলাকায় মিরাজকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থলে প্রচুর রক্তক্ষরণে মিরাজ মারা যান। তাঁর মাথা, কপাল, বুক ও পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কোপানোর চিহ্ন ছিল। মিরাজের সঙ্গে থাকা মাসুদ ও সোহেলকেও আঘাত করা হয়।
সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৫ মে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও লক্ষ্মীপুর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপ-পরিদর্শক মোজাম্মেল হোসেন আদালতে ১২ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন। এর আগে মিরাজ হত্যা মামলায় একাধিকবার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়।
হত্যাকাণ্ডের পরদিন জামায়াত নেতা হাফেজ ইউছুফ ও শিবির নেতা পরানসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন : ১৫০ বোতল ফেন্সিডিলসহ গ্রেফতার ২
পরবর্তীতে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের অব্যাহতি দেওয়ার জন্য মামলার বাদী ও মিরাজের বাবা আবুল কালাম ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন।
এ সময় তিনি একটি সম্পূরক এজাহার দেন। এতে রায়পুরের রাজু, হারুনসহ ১০ আসামির নাম উল্লেখ করেন। এজাহারে ঘটনার সময় মিরাজের সঙ্গে থাকা মাসুদ, সোহেলকেও আসামি করা হয়।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান পাটওয়ারী হত্যা মামলায় আসামিদের খালাসের ঘটনায় রায়পুর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের দায়ী করেছেন।
আরও পড়ুন : গোডাউনে ডাকাতি, গ্রেফতার ২
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতাদের সহযোগিতা না থাকার কারণে সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষী দিতে ভয় পেয়েছে। যার কারণে সত্যিকারের খুনিরাও বেঁচে গেছে। এ রায় হতাশাজনক। মিরাজ হত্যাকাণ্ড ছিল রাজনৈতিক। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা তাদের পাশে দাঁড়ায়নি।’
বাদীর আইনজীবী মিজানুর রহমান মুন্সি বলেন, ‘আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট নই, উচ্চ আদালতে আমরা আপিল করব।’
লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও খেলাঘরের জেলা সভাপতি প্রফেসর মো. মাইন উদ্দিন পাঠান বলেন, ‘একটি মামলার বিচার কার্যক্রমে কয়েকটি পক্ষ (বাদী, সাক্ষ্য, পুলিশ বা তদন্তকারী ও বিচারক) থাকে। এ পক্ষগুলো যদি সঠিকভাবে কাজ করে তাহলে সঠিক বিচার পাওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুন : সাইবারে ঝুঁকি বেড়েছে নারী-শিশুর
মিরাজকে কেউ না কেউ খুন করেছে। কিন্তু আসামিরা খালাস পেয়ে যাওয়ায় হত্যাকারী শনাক্ত হয়নি। এভাবে আসামিরা খালাস পেয়ে যাওয়াতে মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। খুনি-সন্ত্রাসীরা উৎসাহ পাবে।
এর আগ ২০২১ সালের ২৬ আগস্ট লক্ষ্মীপুরে তাহের হত্যা, ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট ছাত্রলীগ নেতা রুবেল হত্যা, ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি মোরশেদ হত্যা, ২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর মিজান হত্যা মামলার রায়ে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় সব আসামিকেই খালাস দেন আদালত।
সান নিউজ/এইচএন