শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ঘড়িষারে একটি রাস্তা বেড়া দিয়ে ও কলা গাছ লাগিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন ওই রাস্তার জমির মালিক। এতে বিপাকে পড়েছে ঘড়িষার ইউনিয়নের চরলাউলানি গ্রামের প্রায় ৪০টি পরিবার। তাদের প্রায় ১ কিলোমিটার পথ ঘুরে স্থানীয় বাজারে আসা-যাওয়া করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ওই রাস্তাটি পাকা সড়কের সাথে গিয়ে মিলেছে। রাস্তাটি ওই এলাকার ছৈয়াল ও মোল্লারা সহ অন্যান্য পরিবার প্রায় ৫০ বছর যাবৎ ব্যবহার করছে। আর রাস্তাটি ব্যবহার করে স্থানীয়রা ঘড়িষার বাজারে ও শিক্ষার্থীরা স্কুল কলেজে আসা-যাওয়া করেন। এছাড়াও এই রাস্তা দিয়ে বেশ কিছু পরিবারের আরো দুই শতাধিক মানুষ চলাচল করে থাকেন। শুধু তাই নয় এই এলাকার পেছনের জমি থেকে ধান–পাটসহ বিভিন্ন কৃষি পণ্যও এই রাস্তা ব্যবহার করে এলাকাবাসী বাড়িতে নিয়ে যান।
আরও পড়ুন : আমরা সবদিক থেকেই প্রস্তুত
তাই গত ২৭ এপ্রিল এর প্রতিকার চেয়ে রহিমা বেগম নামে একজন ব্যক্তি নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, নড়িয়া উপজেলার ঘড়িষার ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের চরলাউলানি গ্রামের রহিমা বেগম সহ আরো ৪০ টি পরিবার প্রায় ৫০ বছর যাবৎ ওই রাস্তা ব্যাবহার করে আসছে। এর মাঝে কয়েক বছর আগে তাদের নিজেদের টাকায় রাস্তা মেরামতও করা হয়ে ছিলো। কিছুদিন আগে পাশ্ববর্তী বাড়ির তারই আপন বাসুরের ছেলেদের সাথে তার ছেলেদের কথা কাটি কাটি হয়। সেই সুত্র ধরে গত ২০ এপ্রিল আব্দুল ছৈয়াল ও চুন্নু ছৈয়াল তাদের বাড়ির সামনে টিন দিয়ে রাস্তা আটকিয়ে রাস্তার মাঝখানে কলা গাছ লাগিয়ে দেয়। এতে করে ওই এলাকার ৪০ টি পরিবার গৃহ বন্দি হয়ে পরে। তারা প্রভাবশালী লোক হওয়ায় স্থানীয়রা ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। ভুক্তভোগীদের হাট বাজারে যেতে হলে প্রায় ১ কিলোমিটার পথ পায় হেটে ঘুরে যেতে হচ্ছে। তাদের সন্তানদের স্কুল কলেজে যেতে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন : ৮ দিনের রিমান্ডে ইমরান খান
এ বিষয়ে রহিমা বেগম বলেন, বাড়িতে ডোকার একটি মাত্র রাস্তা সেই রাস্তাটিও তারা বন্ধ করে দিয়েছে। এখন আমরা কোথাও বের হতে পারছি না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুল কলেজে যাইতে পারে না। এই পুরো বাড়িটা ছিলো আমার শশুরের। আব্দুল ছৈয়ালরা সামনের পাশ দিয়ে জমির ভাগ নেয় আমরা পিছে পরে যাই। তখন কথা ছিলো এই রাস্তা দিয়ে সবাইকে যাতায়াত করতে দেওয়া হবে। কিন্তু আজকে ১৫/২০ দিন হয়ে গেছে তারা রাস্তা আটকে দিয়ে আমাদের গৃহবন্দী করে রাখছে।
এ ব্যাপারে আবুল হোসেন ছৈয়াল বলেন, এই রাস্তা হলো আমার দাদার আমলের রাস্তা। এটা দিয়ে আমরা ৪০ টি পরিবার যাতায়াত করে থাকি। এই রাস্তা আটকিয়ে দেওয়ার কারনে আমরা এই ৪০ পরিবার হাট-বাজার, কাজকর্মে যেতে পারছি না; আত্মীয় স্বজনরা বাজার করে দিয়ে গেলে খাই।
আরও পড়ুন : আলোচনার প্রশ্নই আসে না
ওই এলাকার আরো ভুক্তভোগীরা বলেন, এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২'শত মানুষ যাতায়াত করে থাকে। আজকে অনেক দিন হয়েছে ওই ছৈয়াল বাড়ির আব্দুল ছৈয়ালরা রাস্তা বন্ধ করে দিছে। পরে চেয়ারম্যান মেম্বার কে দায়িত্ব দিলে সে এসে কিছুই করতে পারেন নাই। সে বলে এটা উপর মহল ছাড়া আমরা ভাঙতে পারবো না।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল ছৈয়াল বলেন, আমাদের বাড়ির সামনে জমি আমরা আটকিয়ে দিয়েছি। ওই জমি আমাদের। আমরা আগে মানুষদের যেতে দিতাম এখন দিবোনা। তারা আমার মেয়ের জামাইর সাথে খারাপ ব্যাবহার করছে। আমার মেয়ের জামাইর বাড়ীর লোকদের নামে মামলা দিছে; তাই তাদের রাস্তা আটকিয়ে দিছি।
আরও পড়ুন : হাসপাতালে আরও ২৮ ডেঙ্গুরোগী
এই বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, রহিমা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে জানতে পেরেছি তিনি সহ আরো কয়েকটি পরিবারের চলাচলের রাস্তা আটকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছি আশা করছি খুব শিগ্রই সমাধান হবে।
সান নিউজ/এমআর