জেলা প্রতিনিধি : সিলেটে অভিযান চালিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আরও পড়ুন : নোয়াখালীতে বন্দুক-গুলিসহ গ্রেফতার ১
মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুরে সিলেট র্যাব সদর দফতরে ব্রিফিংকালে র্যাব এসব তথ্য গণমাধ্যমকে জানায়।
গ্রেফতারকৃত চার জঙ্গি হলেন- সিলেটের দক্ষিণ সুরমার হাফেজ মাওলানা মাহমুদ হোসাইনের ছেলে আব্দুল্লাহ মায়মুন (৩৪), ফরিদপুরের চরভদ্রসন এলাকার শেখ আব্দুস ছালাম মাস্টারের ছেলে মো. আবু জাফর (৪০), চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মোস্তফা কাজীর ছেলে মোহাম্মদ আক্তার কাজী সাইদ (৩৮) ও গোপালগঞ্জের মুকসেদপুরের মৃত আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে সালাউদ্দিন রাজ্জাক মোল্লা (৩২)।
আরও পড়ুন : ভোলায় পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু
ব্রিফিংয়ে র্যাব জানায়, গত বছরের ২৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর এলাকা থেকে ৮জন তরুণের নিখোঁজের ঘটনায় কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় করা সাধারণ ডায়েরির বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার হলে র্যাব নিখোঁজদের উদ্ধারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। নিখোঁজ তরুণদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে র্যাব ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামক একটি নতুন জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় থাকার তথ্য পায়।
র্যাব জানতে পারে যে, এই সংগঠনের সদস্যরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কেএনএফ’ এর সহায়তায় সশস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে।
পরবর্তীতে ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইতোমধ্যে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ সর্বমোট ৬৮ জন এবং পাহাড়ে অবস্থান, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কার্যক্রমে জঙ্গিদের সহায়তার জন্য পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কেএনএফ’ এর ১৭ জন নেতা ও সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন : জেএমবি নেতার ২০ বছর কারাদণ্ড
র্যাব আরও জানায়, নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের আমির আনিসুর রহমান মাহমুদ, শুরা সদস্য ও দাওয়াতি কার্যক্রমের প্রধান গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ মায়মুন, সংগঠনের উপদেষ্টা শামীম মাহফুজ, অর্থ ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান রাকিব। নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের অন্যতম শুরা সদস্য ও দাওয়াতি শাখার প্রধান আব্দুল্লাহ মায়মুন সংগঠনের কয়েকজন সদস্যসহ সিলেট এলাকায় অবস্থান করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে এমন সংবাদের প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ মায়মুন সিলেটের স্থানীয় একটি মাদরাসা হতে দাখিল সম্পন্ন করে। অনলাইনে ফিলিস্তিন, মায়ানমার, ইরাকসহ বিভিন্ন স্থানে মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের ভিডিও দেখে সে উগ্রবাদে আকৃষ্ট হয়। ২০১৩ সালে সে স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে আনসার আল ইসলাম জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেন। সে আনসার আল ইসলামের সিলেট বিভাগীয় প্রধান ছিল।
আরও পড়ুন : দোকানঘর থেকে চোরের মরদেহ উদ্ধার
আনসার আল ইসলামের শীর্ষ জঙ্গিনেতা চাকুরিচ্যুত মেজর জিয়ার সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল, এমনকি জিয়া তার বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন। ২০১৯ সালে বগুড়ার একটি সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় সে গ্রেফতার হয় এবং এক বছরের অধিক কারাভোগ করে ২০২০ সালের শেষের দিকে জামিনে মুক্তি পায়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
সান নিউজ/জেএইচ