শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুরে চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেননি ৩১৩ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ২০৯ জনই মেয়ে। চলতি বছর জেলার ৩৩টি কেন্দ্রে মোট ১৪ হাজার ৮৬৮ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও পরীক্ষায় অংশ নেন ১৪ হাজার ৫৫৫ জন।
আরও পড়ুন: সবাই যেন বিধিমালা মেনে চলেন
রোববার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের শিক্ষা ও কল্যাণ শাখার প্রধান অফিস সহকারী মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, অনুপস্থিত স্কুল শিক্ষার্থী ২১৫ জনের মধ্যে ১৫০ জন মেয়ে, ৬৫ জন ছেলে। মাদরাসার ৭৯ অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর মধ্যে মেয়ে ৫১ ও ছেলে ২৮ জন।
এছাড়া কারিগরি শাখা থেকে ১৯ জন অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর মধ্যে মেয়ে ৮ জন ও ছেলে ১১ জন। কারিগরি ছাড়া স্কুল ও মাদরাসায় ছেলেদের তুলনায় মেয়ে শিক্ষার্থী অনুপস্থিত বেশি।
নানা সময়ে বাল্যবিবাহ ও প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে কাজ করা শরীয়তপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সামিনা ইয়াসমিন বলেন, বাংলাদেশ সরকার নারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করলেও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা এখন পর্যন্ত পুরোপুরি সচেতন নন। মেয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ভর্তির পরেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় এখনও।
আরও পড়ুন: দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে
সরকার মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছেন। বাবা মায়েদের উচিত অল্প বয়সে মেয়েকে বিয়ে না দিয়ে পড়াশোনা করানো। তাহলে পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মেয়েরাও এগিয়ে যেতে পারবে।
শরীয়তপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র শর্মা বলেন, বাল্যবিবাহ, বাবা-মায়ের অসচেতনতা, দারিদ্রতা ও দুর্গম চরাঞ্চল মেয়ে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিত হওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান কারণ। সরকার বাল্যবিবাহ নিয়ে যে আইন করেছে, তা সবাই মানলে মেয়ে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির সংখ্যায় বেশি হতো না। বাবা, মা ও শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ থাকবে তারা যেন মেয়ে শিক্ষার্থীদের বাল্যবিবাহ না দেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্রত্যেক স্কুল, উপেজলা প্রশাসন, পুলিশ, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দায়িত্বশীল সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। বাবা-মা অসচেতন বলে গোপনে বিয়ে দেন এসব শিশুদের। সামনের দিনে প্রশাসন বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আরও কঠোর হবে।
সান নিউজ/এনকে