নিজস্ব প্রতিবেদক:
যশোর: যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনায় কেন্দ্রটির তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে সাময়িক (বরখাস্ত সাসপেন্ড) করা হয়েছে। শুক্রবার (১৪ আগস্ট) বিকালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় তাকে বরখাস্ত করে। একইসঙ্গে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে মন্ত্রণালয়।
যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান জানান, যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবুল লাইছকে কমিটির প্রধান, সমাজসেবা অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক অসিত কুমার সাহাকে সদস্য সচিব এবং জেলা পুলিশ সুপারের একজন প্রতিনিধিকে সদস্য করা হয়েছে, যিনি এএসপি পদমর্যাদার নিচে নন। কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
বরখাস্তকৃত শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ছাড়াও সহ তত্ত্বাবধায়ক মাসুম বিল্লাহ, প্রবেশন অফিসার মুশফিকুর রহমান, শারীরিক প্রশিক্ষক শাহনূর রহমানসহ কেন্দ্রে কর্মরত ১০ জনকে শুক্রবার ভোরেই পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। তারা বর্তমানে যশোর পুলিশ লাইনসের ব্যারাকে রয়েছেন।
বিকেলে সমাজসেবা অধিদপ্তর দুই সদস্যের অন্য তদন্ত কমিটি গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। ওই কমিটির প্রধান করা হয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রতিষ্ঠান) সৈয়দ মোহাম্মাদ নুরুল বসিরকে। তার সঙ্গে তদন্তকাজে সহায়তা করবেন উপ-পরিচালক (প্রতিষ্ঠান-২) এসএম মাহমুদুল্লাহ। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে এ কমিটিকে মহাপরিচালকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে কেন্দ্রটিতে বন্দি তিন কিশোর নিহত হয়। গুরুতর আহত আরো ১৫ জনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিশোরদের নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে আসছিল কর্তৃপক্ষ। তবে হাসপাতালে ভর্তি আহত কিশোররা বলেছে, কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যদের বেধড়ক মারপিটে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও তেমনটিিই প্রমাণ পাওয়ার ইঙ্গিত দেন।
অভিযোগের তীর তখন ঘুরে যায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দিকেই, যারা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
নিহতরা হলো, বগুড়ার শিবগঞ্জের তালিবপুর পূর্বপাড়ার নান্নু পরমানিকের ছেলে নাঈম হোসেন (১৭), একই জেলার শেরপুর উপজেলার মহিপুর গ্রামের আলহাজ নুরুল ইসলাম নুরুর ছেলে রাসেল ওরফে সুজন (১৮) এবং খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা পশ্চিম সেনপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান রাব্বি (১৮)।
সন্ধ্যায় কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহত তিন কিশোরের একজন পারভেজ হাসান রাব্বীর বাবা রোকা মিয়া। তিনি খুলনার মহেশ্বরপাশা এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন ও কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ভুক্তভেগী এক অভিভাবক মামলা করেছেন। মামলায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষকে আসামি করা হয়েছে।’
সান নিউজ/ এআর