নিজস্ব প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামে কাস্টমস বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ছদর উদ্দিন মানিক ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ইতালি প্রবাসী তাজুল ইসলামের জায়গা-জমি ও পুকুর দখলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখানে লাগানো লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগে ঢাকায় কর্মরত মানিক ও তার মা-বাবাসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
মানিক প্রবাসী তাজুল ইসলামের বড় ভাই আবু শামীমের ছেলে। এ ঘটনায় পরিত্রাণ চেয়ে চাচা তাজুল নিজেও ইতালিস্থ বাংলাদেশি দূতাবাসে ভাতিজার বিরুদ্ধে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। আবেদনের অনুলিপি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা মানিকের প্রভাবে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী তাজুল ইসলাম।
দূতাবাসে করা আবেদনে বলা হয়, মানিক ও তার পরিবারের অন্যরা মিলে প্রবাসী তাজুলের পৈত্রিক ও ক্রয়সূত্রে তাজুলের পাওয়া বাড়ি সংলগ্ন ১১ শতাংশ জমি ও ২৪ শতাংশের পুকুর গ্রাস করে নিয়েছেন।
তাজুল অভিযোগ করে বলেন, প্রায় দুই যুগ ধরে তিনি প্রবাসে অবস্থান করছেন। তার পরিবারের সদস্যরাও প্রবাসে আছেন। এর ফলে বাড়ি সংলগ্ন ওই জায়গাসহ পুকুরটি একই গ্রামের মৃত তঞ্জব আলীর ছেলে দুলাল মিয়ার কাছে লিজ দেন। কিন্তু লিজ দেওয়া এই জায়গাগুলো ছদর উদ্দিন মানিক ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে গ্রাস করে নিয়েছেন। তারা লিজের মালিককে গাছ ও মাছ ভোগ করতে দিচ্ছেন না।
লিজ গ্রহীতা দুলাল মিয়া জানান, পাঁচ বছরের জন্য পুকুর ও তিন বছরের জন্য বাড়ি সংলগ্ন জায়গা লিজ নেন তিনি। এর মধ্যে পুকুরে চাষ করা মাছগুলো বিষ ঢেলে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন মানিক ও তার পরিবারের লোকজন। জমিতে লাগানো গাছগুলোও কেটে নিয়েছেন তারা।
গত ৩ এপ্রিল গামারি ও মেহগনিসহ লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে নেওয়ার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে কোনো বিচার না পেয়ে ২০ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মানিকসহ চারজনের বিরেুদ্ধে মামলা করেন দুলাল। তবে মামলার প্রায় একমাস পরেও অভিযুক্তরা আইনের আওতায় না আসায় ক্ষোভ জানিয়েছেন দুলাল।
দুলালের মতোই প্রবাসী তাজুলের মালিকানাধীন ৪১ শতাংশ আয়তনের আরেকটি জমি লিজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার গোকর্ণ গ্রামের হাজী গণি মিয়ার ছেলে আরস মিয়া। লিজের জায়গায় আরসের অনুমতি ছাড়াই দোকান দিয়েছেন তাজুলের বড় ভাই আবু তাহের।
লিজগ্রহীতা আরস মিয়া বলেন, ‘আমার লিজ নেওয়া ৪১ শতাংশ জায়গায় স্কুল রয়েছে। স্কুল কমিটি আমাকে ভাড়াও দিচ্ছে। কিন্তু আমার অনুমতি ছাড়াই তাজুলের বড় ভাই আবু তাহের জোর করে স্কুলের পাশে দোকান বসিয়েছেন। দোকান সরিয়ে নিতে বললে আমাকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় আমি মামলাও করেছি। সবকিছুই হচ্ছে মানিকের প্রভাবে।’
সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ছদর উদ্দিন মানিক তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেন।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, মামলার নথিপত্র দেখে ও তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে বলা যাবে।
সান নিউজ/ এআর