নিজস্ব প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জ: গত কয়েকদিনের বন্যায় জেলার পাঁচ উপজেলার পাঁচ হাজার ৫৯৭টি মৎস্যঘেরের পাড়া তলিয়ে ঘেরের সব মাছ ভেসে গেছে। এতে মৎস্যচাষীদের ৩৬ কোটি ১৬ লাখ টাকার ক্ষতি নিরূপণ করেছে জেলা মৎস্য বিভাগ।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, গত জুলাই মাসের শেষ দিকে গোপালগঞ্জে বন্যা দেখা দেয়। এতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪৪৫টি, কোটালীপাড়া উপজেলায় তিন হাজার ৪৩১টি, টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৮৮৮টি, কাশিয়ানী উপজেলায় ৬৪৩টি ও মুকসুদপুর উপজেলায় ১৯০টি ঘের ভেসে ওই পরিমাণ ক্ষতি হয়।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কয়েকজন মৎস্যচাষি জানান, অধিকাংশই ধার-দেনা হয়ে মাছ চাষ করে থাকেন। স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন এনজিও ও মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে ঘেরে মাছ ছেড়েছিলেন তারা। কিন্তু বন্যার পানিতে ঘের ভেসে যাওয়ায় তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সরকারের কাছে প্রণোদনার দাবি জানিয়েছেন।
কাশিয়ানী উপজেলার সিংগা গ্রামের মাছচাষি স্বপন বিশ্বাস বলেন, ‘এ বছরই প্রথম আড়াই বিঘা জমিতে ঘের তৈরি করি। নিজের গচ্ছিত টাকা ও লোকের কাছ থেকে ধার-দেনা করে মাছ চাষ শুরু করি। পুকুরে যে মাছ ছিল, তা বেচতে পারলে দেনা দিয়ে লাভবান হতে পারতাম। ঘেরে চিংড়ি ও কার্প জাতীয় সব মাছই ভেসে গেছে। এতে আমার ৫/৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
একই গ্রামের কৃপা ঢালী, সুভাষ ঢালী ও একই উপজেলার রাহুথর গ্রামের বাবুল রায় বলেন, ‘বন্যার শুরুতে নেট কিনে ঘেরের মাছ রক্ষার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। আমার ঘেরের সব মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এতে আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ‘
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বনগ্রামের ঘের মালিক এস এম নজরুল ইসলাম জানান, তার চারটি মাছের পুকুরে বন্যার পানি ঢুকে মাছ ভেসে গেছে। নেট দিয়ে মাছ রক্ষার চেষ্টা করেও পারেননি। এতে তার প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বৈরাগী জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তারা প্রণোদনা পাবেন।
সান নিউজ/ এআর