গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বাঙ্গালী নদীর চরে পতিত জমিতে মিষ্টি আলুর চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। আশানুরূপ ফলন পেয়ে কৃষকগণের মুখে হাসি ফুটেছে। সাঘাটা উপজেলার উৎপাদিত মিষ্টি আলু জাপান ও সিঙ্গাপুরে রপ্তানি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : রাস্তায় নয়, সংকট হবে শৃঙ্খলায়
কৃষক সিদ্দিক হোসেন চলতি মৌসুমে ৫০ শতক জমিতে জামানি কোকি ১৪ গো জাতের মিষ্টি আলুর চাষ করেছে। ফলন ভালো হয়েছে। ওই জমিতে ৫ হাজার ২৬০ কেজি আলু উৎপাদন হয়েছে। প্রতি কেজি ১৬ টাকা হিসেবে যার মূল্য প্রায় ৮৪ হাজার টাকা। খরচ বাদে তার লাভ হয়েছে অর্ধেকেরও বেশি।
কৃষক সিদ্দিক হোসেন ছাড়াও সাঘাটা উপজেলার কচুয়া গ্রামের ওয়াজেদ আলী, নজু মিয়া, নূরুল হুদা, নূরুল ইসলাম, চন্দনপাঠ গ্রামের আজাদ হোসেন, আবুল কালাম, মাহফুজার, সামসুদ্দিন, মোকলেছুর, আজাদুল ও তৌহিদুলসহ ১৩ জন কৃষক মিষ্টি আলুর চাষ করেছে। মিষ্টি আলুর চাষ করে লাভবান হওয়ায় মিষ্টি আলু চাষে এলাকার কৃষকগণ আগ্রহী হচ্ছে। সাঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ কৃষকদের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা প্রদান করছে। প্রতিটি মিষ্টি আলুর ওজন হয়েছে দেড় পোয়া থেকে হাফ কেজি পর্যন্ত। এসব মিষ্টি আলু ক্রয় করেছে জাপানের নারুতো জাপান কোম্পনি নামে প্রতিষ্ঠান। জাপানী ওই কোম্পনি কৃষকদের নিকট থেকে প্রতি কেজি মিষ্টি আলু ১৬ টাকা দরে ক্রয় করছে। শুধু জাপান নয় সিঙ্গাপুরেও এ মিষ্টি আলু রপ্তানি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত
নারুতো জাপান কোম্পনির সিনিয়র ম্যানেজার কৃষিবিদ মেজবাউল ইসলাম বলেন, কোম্পনির সহযোগিতায় ৭৯৫ শতক জমিতে ৩৭ জন কৃষক মিষ্টি আলুর চাষ করেছে। এতে মোট ফলন হয়েছে ৩৪ দশমিক ১৫ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ক্রয় করা হয় ২৪ দশমিক ৩১৭ মেট্রিক টন। পোকা ধরা, কেটে যাওয়া, ইঁদুর খাওয়া, ছোট আলু ও ৫০ গ্রাম এর নিচে হওয়ায় সেগুলোকে ক্রয় না করে বাদ দেওয়া হয়।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সাঘাটা উপজেলার বাঙ্গালী নদীর চর ও নদীর তীরবর্তী পতিত ১৭০ হেক্টর জমিতে জাপানি কোকি ১৪ গো জাতের ১০ হেক্টর ৭৫ বিঘা ও অন্যান্য জাতের ১৬০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ করা হয়েছে। বাঙ্গালী নদীর চরাঞ্চল ও নদীর তীরবর্তী পতিত জমিতে উৎপাদিত মিষ্টি আলু জাপান ও সিঙ্গাপুরে রপ্তানি হচ্ছে। কৃষি বিভাগের কারিগরি সহযোগিতায় জাপানের নারুতো জাপান কোম্পনি নামে প্রতিষ্ঠানটি কৃষকের জমি থেকে সরাসরি মিষ্টি আলু ক্রয় করে জাপান ও সিঙ্গাপুরে পাঠাচ্ছে। এসব মিষ্টি আলু প্রক্রিয়াজাত করে প্রথমে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন : তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধির পূর্বাভাস
সাঘাটা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাদেকুজ্জামান বলেন, চরাঞ্চলের পতিত জমিতে মিষ্টি আলু চাষ করায় দুই ফসলি ও তিন ফসলি জমিতে রূপান্তরিত হচ্ছে।
সান নিউজ/এমআর