জেলা প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী কে গলা টিপে হত্যার দায়ে স্বামী আরমান হোসেন আরিফকে (৩০) ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত বেড়ে ৫
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে এ রায় দেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম।
দণ্ডপ্রাপ্ত আরমান হোসেন আরিফ সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পশ্চিম শেরপুর গ্রামের চৌকিদার বাড়ির মৃত আমির হোসেনের ছেলে।
আরও পড়ুন : হোটেল থেকে ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রায়ের সময় আসামি আরিফ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালত তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আরিফের সাথে একই উপজেলার জাহানাবাদ গ্রামের হাসানের আহম্মেদের মেয়ে লামিয়ার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর তারা নিজেরাই বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর সাথে অন্যান্য ছেলেদের পরকীয়ার সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করে আরিফ।
আরও পড়ুন : বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ
লামিয়া মোবাইল ফোনে আরকজনের সাথে কথা বলতেন। আরিফ নিষেধ করলেও তিনি শুনতেন না। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। বিভিন্ন সময় আরিফ তাকে মারধর করতেন বলে লামিয়া আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তখন বাড়ির লোকজন তাকে রক্ষা করে।
২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে পরকীয়ার সন্দেহে আরিফ তার স্ত্রী লামিয়াকে মারধর করে গলা চেপে ধরে। এতে লামিয়া অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে আরিফ তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে লামিয়া মারা যান।
আরও পড়ুন : ধান ও চাল কিনবে সরকার
আরিফ তার স্ত্রীর মরদেহ বাড়িতে রেখে পালিয়ে যান। এ সময় তার অন্য স্বজনরাও গা ঢাকা দেয়। এ সময় আরিফ তার শাশুড়ি সুফিয়া আক্তারকে জানায় লামিয়া অসুস্থ। তিনি ছুটে এসে দেখেন ঘরে লামিয়ার মরদেহ পড়ে আছে।
এ ঘটনায় ঐ বছরের ১ অক্টোবর সুফিয়া বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় আরিফ, তার ভাই মো. সফিক ও বোন জেসমিন আক্তারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন : প্রশান্তির বৃষ্টি মসজিদে নববীতে
এরপর ২০১৯ সালের ১০ জুলাই আরিফকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের কাছে আরিফ তার স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে। আদালতেও হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।
২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান আরিফের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। অন্য ২ আসামি সফিক ও জেসমিনকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ এ রায় প্রদান করেন।
সান নিউজ/এনজে