বিভাস দত্ত, ফরিদপুর থেকে:
ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত ‘বিল শোকনিয়া’ প্রায় এক যুগ ধরে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল জবর দখল করে ভোগ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে প্রকৃত মৎসজীবীরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। যদিও উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সরকারিভাবে ইজারা না দেওয়া পর্যন্ত ‘জাল যার, জলা তার’ নীতিতে স্থানীয়রাই ভোগ করবেন বিলটি।
ঘোড়াদাহ হালট থেকে প্রতাপপুর হালট পর্যন্ত অধিগ্রহণ করা ১৬ একরসহ আশেপাশের ব্যক্তিমালিকানাধীন অন্তত ৫০ একর জমির জলা নিয়ে বিল শোকনিয়া। মঙ্গলকোর্ট, ঘোড়াদহ, বিলনালিয়া, বিলসোকুনিয়াসহ আশেপাশের অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ এ বিলের মাছে আমিষের চাহিদা মেটাতেন। আশেপাশের কয়েক গ্রামের শতাধিক জেলে পরিবার মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো।
অভিযোগকারী বাচ্চু সরদার, আছাদ মোল্লাসহ স্থানীয়দের দাবি, মাছ ধরতে না পারায় এসব পরিবার অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছে। অবিলম্বে এ জলাশয় উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবিও জানান মৎস্যজীবীরা।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রকৃত মৎস্যজীবীদের দেওয়া লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, এসব জলাভুমি ১১-১২ বছর ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজ্জাক মোল্লা, মনির মোল্লা, রহমাতুল্লাহ ফকির ও রহমান সরদার গংরা দখলে নিয়ে ভোগ করছেন। তারা ওই পানিতে কাউকে মাছ শিকার করতে দেন না। কেউ মাছ ধরতে গেলে হামলা চালিয়ে বাড়ি-ঘর ভাংচুর করা হয়। আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে দখল করে রাখায় কেউ প্রতিবাদ করতেও সাহস পান না।
দখলকারীদের একজন রহমান সরদার বিল শোকনিয়া ভোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিল থেকে প্রাপ্ত অর্থ আশেপাশের চারটি মসজিদের উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করা হয়।
ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে তদন্তে দেখা গেছে, ওই জলাশয়ের অধিকাংশই পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানাধীন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর বিলটি ইজারা দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
তিনি জানান, যেহেতু এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে ইজারা দেওয়া হয়নি, তাই এই জলাভুমি ‘জাল যার জলা তার’ নীতিতে বিল ও খালপাড়ের মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কেউ সেখানে বাধা দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/ এআর