জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের মাদারগঞ্জে ৭৫২ একর আবাদি (তিন ফসলী) জমিতে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন চরাঞ্চলের মানুষ।
আরও পড়ুন : ক্ষতিগ্রস্তদের কান্না সহ্য করা যায় না
বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে '৭৫২ একর কৃষি জমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি'র উদ্যোগে উপজেলার জোড়খালী ইউনিয়নের কাইজ্জার চরে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ মিছিল অংশ নেয় চরবাসী।
পরে প্রকল্পের প্রস্তাবিত ভূমিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন,কৃষকের তিন ফসলি জমি নষ্ট করে কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না। দেশে আনাবাদি বহু জায়গা আছে যেখানে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। আর যদি এই জমিতেই সৌরবিদ্যুত প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে কৃষকের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করার দাবি জানান তিনি।
প্রতিবাদ সভায় এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, নদী সিকস্তি অঞ্চলের ডিএস, সিএস, এসএ রেকর্ড ও জমিদারী আমলের পয়স্তি মালিকানা হরণ করে কাইজ্জার চর এলাকায় প্রায় ৭৫২ একর জমি ভুল ব্যাখ্যা করে বিআরএস অন্তর্ভূক্তি থেকে বাদ দেয়া হয়। বাপ-দাদার আমলের সে সমস্ত মালিকানা জমি খাস খতিয়ানভূক্ত করে ও অনাবাদী দেখিয়ে বেসরকারি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। এতে জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার পথে চরাঞ্চলের ১০ সহস্রাধিক মানুষ।
আরও পড়ুন : মার্চে সড়কে ঝড়ল ৫৯২ প্রাণ
স্থানীয় কৃষকরা জানান, প্রধানমন্ত্রী ও ভূমিমন্ত্রী বলেছেন, আবাদী জমি নষ্ট করে শিল্পকারখানা করা যাবে না; কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন জমিগুলো অনাবাদী দেখিয়েছে। অথচ এ অঞ্চলের প্রতি বিঘা জমিতে ৫০-৬০ মণ ভুট্টা, ৪০-৪৫ মণ মরিচ, ৩০-৩৫ মণ ধান ও ৭-৮ মণ সরিষাসহ প্রতি মওসুমে বিভিন্ন প্রজাতির ফসল উৎপন্ন হয়।
কৃষকদের দাবি, হয় এ প্রকল্প স্থানান্তর করুক, নয় তাদের মেরে ফেলুক।
আরও পড়ুন : নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের দাবি
সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ক্ষেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আনোয়ার হোসেন রেজা, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোজহারুল হক, নাট্যকার বীরমুক্তিযোদ্ধা আলী আক্কাস, 'নদী ভাঙলে জমি খাস' আইন বাতিল বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক কবি আলতাফ হোসেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রাজু শেখ, আশরাফ হোসেন, আঈন উদ্দিন প্রমুখ।
সমাবেশে কাফনের কাপড় পড়ে মাদারগঞ্জের আতামারি, কুকুরমারি, ফুলজুর, ধারাবর্ষা, কামারপাড়া ও বারইপাড়া চরের সহস্রাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করে।
সান নিউজ/এমআর