জেলা প্রতিনিধি (পাবনা) : বাবার চেয়ে ৪ বছর আর মায়ের চেয়ে ১৪ বছরের বড় ছেলের বয়স হওয়াতে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে কলেজপড়ুয়া আব্দুস সাত্তারকে। জন্ম নিবন্ধনের বয়সে এমন ভুল তথ্য লিপিবদ্ধ হওয়ায় হতে পারছেন না ভোটারও। এমন পরিস্থিতিতে সহপাঠীরাও ঠাট্টা করছে।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন
বয়সের এমন পার্থক্য দেখা গেছে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পুন্ডুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. আজমত আলীর ছেলে আব্দুস সাত্তারের।সে বেড়া ইছামতি কমার্শিয়াল কলেজ থেকে এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে নিবন্ধন সংশোধনের জন্য আবেদন করে দীর্ঘদিন ঘুরেও কোন সমাধান মিলছে না তার। আব্দুস সাত্তার ভবিষ্যত নিয়ে আছেন দুশ্চিন্তায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্রে সাত্তারের বাবা মো. আজমত আলীর জন্ম তারিখ লিপিবদ্ধ আছে ১৯৫৭ সালের ৮ জানুয়ারি এবং মায়ের ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৭। ছেলে আব্দুস সাত্তারের জন্মনিবন্ধনে জন্ম তারিখ লিপিবদ্ধ হয়েছে ১৯৫২ সালের ৫ অক্টোবর। সে হিসেবে পিতার চেয়ে ৪ বছরের বড় এবং মায়ের চেয়ে ১৪ বছরের বড় আব্দুস সাত্তার। প্রকৃতপক্ষে আব্দুস সাত্তারের জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি সমমানের শিক্ষা সনদে বয়স রয়েছে ১৬ ডিসেম্বর ২০০৪। সে হিসেবে তার বর্তমান বয়স ১৮ বছর।
আব্দুস সাত্তার জানান, ‘জন্ম নিবন্ধনের তথ্য সংগ্রহ করার সময় সংগ্রহকারীর ভুলে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে আমাকে। গতবছর এলাকায় হালনাগাদ করতে এলে ভোটার হওয়ার জন্য সকল কাগজপত্র জমা দেই তাদের কাছে। এরপর সবাইকে ছবি তোলার জন্য ডাকা হয়, সেদিন ছবি উঠাতে গেলে আমারটা বাতিল করা হয় এবং বয়স সংশোধন করে পূনরায় আবেদন করতে বলেন।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে এতিমদের সৌজন্যে ইফতার
এই ভুল সংশোধন করতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে আমাকে। নানা কাগজপত্র জমা দেয়ার বেড়াজালে বয়সটা কোনভাবেই সংশোধন হচ্ছে না। এ বিষয়ে আমার বন্ধুদের সাথে আলোচনা করলে তারা আমাকে ঠাট্টা করে বলে তুইতো দাদু হয়ে গেছিস বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করতে পারিস। সব মিলিয়ে ভবিষ্যতে চাকরি করা নিয়েও দূশ্চিন্তায় আছি।
আজমত আলী বলেন, ছেলের বয়স আমার চেয়েও বড় হওয়ায় ছেলে ভোটার হতে পারছে না। বেশ কয়েক মাস ধরে বিড়ম্বনার মধ্যে রয়েছি। ইউনিয়ন পরিষদ আর ইউএনও অফিস ঘুরতে ঘুরতে দিন যাচ্ছে। দ্রুত বয়স ঠিক না হলে জাতীয় পরিচয়পত্র করতে পারছে না।
করমজা ইউপি সচিব আব্দুল মতিন জানান, জন্মনিবন্ধনের এরকম জটিলতা বহু মানুষের রয়েছে। বহু সংশোধন করা হয়েছে তবে বর্তমানে সার্ভার থেকে বয়স সংশোধনের অপশনটাই তুলে দিয়েছেন যে কারনেই আর বয়স সংশোধন করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার যদি সার্ভারে বয়স সংশোধনের অপশন আসে সংশোধন করা যাবে।
আরও পড়ুন: মহানগর শপিং কমপ্লেক্সে আগুন
সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুদ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা ছিল না। ছেলেটি তার প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রসহ আমার সাথে যোগাযোগ করলে বিষয়টি সমাধানের জন্য সহযোগিতা করব।
সান নিউজ/এসআই