জান্নাত জাহান জুঁই, (নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়) : ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতার নামাঙ্কিত হলটি উদ্বোধনের এক বছর গড়াতেই চোখে পড়ছে নানা অনিয়ম। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে খাদ্যের সমস্যা।খাবারের দাম অন্য যেকোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে অনেক বেশি।শিক্ষার্থীরা টাকা খরচ করছে ঠিকই কিন্তু খাদ্যের পুষ্টিগুণ খুবই নিম্নমানের হওয়ায় পুষ্টির চাহিদা অপূর্ণই থেকে যাচ্ছে বলে জানায় শিক্ষার্থীরা। অপুষ্টিকর খাবার খেয়ে দিনের পর দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছে তারা।
আরও পড়ুন : ইউপি মেম্বারের ভাইয়ের বাড়িতে চোরাই মোটরসাইকেল
শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায় যে, হলের ডাইনিংয়ে তিনবেলা তরকারি রান্না না করে দুপুরে রান্না করা খাবার রাতে গরম করে বিক্রি করা হয়।যার ফলে ফুড পয়জনিংসহ আরো নানান সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ডাইনিংগুলোতে যেখানে বিনামূল্যে ভাত দেওয়া হয়, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা হলের ডাইনিংয়ে সেই ভাত খেতে হয় ৮ টাকা মূল্যে অথচ ভাতগুলোতে পঁচা গন্ধের কারণে মুখে নেওয়া যায় না । যেকোনো একটা মাছ বা মুরগির তরকারির মূল্য ৩০ টাকা। ৩ বেলা অল্পমূল্যে খাওয়ার মতো কোনো খাবার রাখা হয়না।
যারা মধ্যবিত্ত তারা মাসের খরচ অল্প টাকায় চালাতে পারবেনা বলে ২ বেলা খেয়ে মাসের পর মাস কাটাচ্ছে। মাছ ভর্তার নামে পরিবেশন করা হয় বাধাকপি ভাজি। যেখানে শিক্ষার্থীদের আর্থিক খরচ কমানোর জন্য হলগুলো নির্মাণ করা হয় সেখানে হলে বাইরের খাবারের হোটেলগুলোর তুলনায় নামমাত্র কয়েক টাকা কমে সেই খাবার বিক্রি করা হয়।
হলের ডাইনিংয়ের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ রয়েছে। ডাইনিংয়ের জগ,গ্লাস, টেবিল,চেয়ার বেশিরভাগ সময়েই নোংরা থাকে,পোকামাকড় মরে পড়ে থাকে।কখনো কখনো হলের ডাইনিংয়ের রান্না করা ডালে কীটপতঙ্গ পাওয়া যায় বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।দীর্ঘদিন যাবত এমন অবস্থার মুখোমুখি হয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের প্রকাশ ঘটছে।এছাড়া ১০ তলাবিশিষ্ট হলে ১১৩০ জন শিক্ষার্থীর জন্য নেই কোনো রান্নার ব্যবস্থা,নেই কোনো গ্যাস সংযোগ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানায়,এভাবে অধিক মূল্যের বিনিময়ে অপুষ্টিকর খাবার খেয়ে দিন আর কাটছে না।আমরা বেশিরভাগই মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছি। আমরা প্রায়ই চেষ্টা করি অল্প মূল্যে খেয়ে হলেও পুরো মাস কাটাতে। কিন্তু এখানে এমন খাবার থাকে যেখানে একটা ভাত আর তরকারির মূল্য হয়ে যায় ৪০-৫০ টাকা।১০-১৫ টাকার মধ্যে কোনো তরকারিই দুপুর এবং রাতে পাওয়া যায় না।
আরও পড়ুন : নওগাঁয় গণহত্যার দেয়াল পত্রিকা উৎসব অনুষ্ঠিত
এই বিষয়ে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট নুসরাত শারমিন তানিয়া বলেন,আমরা ভাতটা অন্তত ফ্রী করার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু হলে ভর্তুকি না থাকায় এটা করা সম্ভব হচ্ছে না।হলের ডাইনিং পরিচালকের সাথে কথা বলে খাবারের দাম কমাতে আমরা চেষ্টা করবো সাথে সাথে খাবারের মান যাতে ভালো হয় সে বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিব।
সান নিউজ/এসআই