নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ছাত্রলীগের বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০জন আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন : বোয়ালমারীতে মৎস্য চাষ প্রকল্পের উদ্বোধন
শুক্রবার (২৪ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার সোনাইমুড়ী সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোনাইমুড়ীতে উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমানে দুটি কমিটি রয়েছে। তারা আলাদা আলাদা ভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে। পুরনো কমিটির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সুজন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল উদ্দিন। গত বছর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙ্গে দেয়। ওই দিনই নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন একটি কমিটি ঘোষণা করে। কমিটিতে আরিফ হোসেনকে সভাপতি ও রাসেল মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
ছাত্রলীগের বিবদমান অপর গ্রুপ অভিযোগ করে, জেলা ছাত্রলীগ টাকা নিয়ে এই কমিটি দেয়। যেহেতু বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জেলা কমিটি ভেঙ্গে দিছে। সে ক্ষেত্রে জেলা ছাত্রলীগের এই কমিটি দিতে পারেনা। এরপর আরিফ-রাসেলের নতুন এই কমিটিকে কেন্দ্রীয় কমিটি বৈধ ঘোষণা করেছে বলে দাবি করে তারা। এই বৈধতার আলোকে উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে উপজেলার সোনাইমুড়ী সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আরও পড়ুন : আ’লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা
সভায় উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমিনুল ইসলাম বাকের ও সাধারণ সম্পাদক আফম বাবু ও জেলা পরিষদের সদস্য বাহার প্রমূখ। সেখানে ভিডিও কনফারেন্সে নতুন উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা বৈধ ঘোষণা করে বক্তব্য রাখার কথা ছিল। এমন খবর পেয়ে সেখানে উপজেলা ছাত্রলীগের পুরনো কমিটির সভাপতি সুজন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল তাদের অনুসারীদের নিয়ে সভাস্থলে গিয়ে সভা পন্ড করে দেয়। ওই সময় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০জন আহত হয়। তবে তাৎক্ষণিক আহতদের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি।
সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের পুরনো কমিটির সাধারাণ শ্যামল উদ্দিন বলেন, সংঘর্ষ ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে আমাদের ৩-৪জন নেতাকর্মি আহত আছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামায়াত শিবির থেকে আগত নেতারা আজকে ছাত্রলীগের নামে সভা করতে চেয়েছিল। ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতাকর্মিরা বিষয়টি টের পেয়ে সভা বন্ধ করে দেয়। এই কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
আরও পড়ুন : চোরাই গরু কিনলেন ইউপি চেয়ারম্যান!
সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সাধারাণ রাসেল মাহমুদ বলেন,আমরা আমাদের কার্যক্রম করছি। প্রতিপক্ষ নেতারা বিবাহিত ও বাচ্চা-কাচ্চা আছে। তারা ৮-১০ বছর আগের কমিটির নেতা ছিল। জেলা ছাত্রলীগ তাদের কমিটি বিলুপ্ত করে গত বছরের ১৫ মে সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে, এই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, বিএনপি জামায়াতের সাথে হাত করে প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগ নেতারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ সময় আমাদের ৩-৪জন ছাত্রলীগ নেতা আহত হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাইমুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমিনুল ইসলাম বাকের সংঘর্ষের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, এখানে কেন্দ্র একটি কমিটি দিয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের পুরনো কমিটি বাদ দিয়ে নতুন কমিটি দেওয়া হয়েছিল। আজকের সভায় ভিডিও কনফারেন্সে কেন্দ্রীয় কমিটি সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিকে বৈধ কমিটি হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। উপজেলা ছাত্রলীগের বিবদমান অপর গ্রুপ বলতেছে তারা এ সভা করতে দেবেনা।
আরও পড়ুন : গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জিয়াউল হক সাংবাদিকদের জানান,ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারির খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সান নিউজ/এইচএন