মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার হাসাইল বানারী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে মাতৃকালীন কার্ড দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রিনা বেগমের বিরুদ্ধে রয়েছে আরও নানা অভিযোগ।
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, হাসাইল বাজারের নৈশ্যপ্রহরী আব্দুল জব্বর গাইনের ৮ মাসের গর্ভবতী মেয়ে হালিমার জন্য মাতৃকালীন কার্ড করে দেওয়ার জন্য রিনা মেম্বার কে অনুরোধ করলে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য হালিমার মায়ের কাছে ৫ হাজার টাকা চান।
ভুক্তভোগীর পিতা জব্বর গাইন জানান, আমরা গরীব মানুষ টাকা কিভাবে দিবো। বিনামূল্যে কার্ড করে দেওয়ার অনুরোধ করলে অভিযুক্ত রিনা মেম্বার বিভিন্নভাবে আমাদের অপমান করেন। অভিযুক্ত মেম্বার আমার মেয়েকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে যা প্রকাশ্যে বলা সম্ভব না।
একই ইউনিয়নের সলেমান তাতীর ৭ মাসের গর্ভবতী স্ত্রী রুনা আক্তার বলেন, গর্ভবতী কার্ডের জন্য আমাদের ওয়ার্ডের রিনা মেম্বারের কাছে গেলে তিনি ডাক্তারী পরিক্ষার রিপোর্ট নিয়ে যাইতে বলে। এরপর রিপোর্ট নিয়ে গেলে তিনি আরো কাগজ পত্র নিতে বলে। উনি যা যা চাইছে সব দেওয়ার পরেও বলেন তোমার নাম দেওয়া যাবেনা। কি কারনে নাম দেওয়া যাবেনা জানতে চাইলে রিনা মেম্বার রেগে গিয়ে আর নাম দেন নাই।
একই ওয়ার্ডের দরিদ্র রানু বেগম বলেন, ৭ মাসের গর্ভবতী ছেলের বউয়ের জন্য রিনা মেম্বারকে একটা কার্ড করে দিতে বললে সে ৫ হাজার টাকা চায়। আমরা গরীব মানুষ এতো টকা দিয়ে যদি গর্ভবতী কার্ড করি, তাহলে সরকার ফ্রি দিলো কিভাবে।
আরও পড়ুন: নতুন রাষ্ট্রপতির শপথে বাধা নেই
এলাকাবাসী বলেন, রিনা মেম্বারের স্বামী অনেক আগেই দুর্ঘটনায় মারা যায়। স্বামী মারা যাওয়ার পর ৩ মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটলেও মেম্বার হওয়ার পর বয়স্কভাতা, গর্ভবতী ভাতাসহ বিভিন্ন কার্ড করতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে এখন খুব স্বাচ্ছন্দ্যেই দিন কাটাচ্ছেন। সেদিনের দরিদ্র অসহায় রিনা যেনো এখন স্বর্গে ডুবে আছেন।
এ বিষয়ে হাসাইল-বানারী ইউপির সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ড সদস্য রিনা বেগম বলেন, গত মাসে আমাকে গর্ভকালীন ভাতার ৫ টি কার্ড ইউনিয়ন পরিষদ হতে দিয়েছে। আমি পাঁচজনকে দিয়ে দিয়েছি। কিন্তু এর বাইরেও আরো অনেক লোকজন গর্ভবতী ভাতার জন্য আমার কাছে আসে। আমি তাদেরকে পরবর্তীতে ভাতার কার্ড আসলে দিব বলেছি। আমি কারো কাছে টাকা দাবি করি নাই। তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।
হাসাইল-বানারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান দেওয়ান বলেন, আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। এমন ঘটনা ঘটলে, প্রমান পেলে ব্যবস্হা নিবো। কেউ ভাতার কার্ড না পেলে, সরাসরি আমার কাছে যোগাযোগ করবেন।
সান নিউজ/এনকে