পোকার আক্রমনে নষ্ট হয়ে গেছে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার ৯০ ভাগ পাকা আমন ধান। আমন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষকের চোখ জুড়ে কেবলই অন্ধকার।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, ঘুর্নিঝড় বুলবুলের বাতাসে উড়ে আসা ঝাকে ঝাকে অজ্ঞাত এক ধরণের পোকা। সেই পোকার আক্রমনে ধীরে ধীরে মরে লাল হতে থাকে সবুজ ধানের ক্ষেত।
হঠাৎ করে কোথা থেকে এলো এমন পোকা, তা সঠিক করে বলতে পারছেন না কেউ। কৃষকের কাছে অজ্ঞাত সে পোকার নাম দিয়েছে কারেন্ট পোকা। পোকার হাত থেকে রক্ষায় নানা ধরনের কটিনাশন ব্যবহার করেও কোন লাভ হয়নি। ধান গাছ মরে নষ্ট হয়ে গেছে ৯০ ভাগ জমির ফসল।
কৃষি বিভাগের হিসেবে মোংলা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে এবার প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। সেখান থেকে চাষিরা ঘরে তুলতে পারবেন মাত্র ১০ ভাগ ধান। বাকিটা খড় ছাড়া কোন কাজেই আসছেনা কৃষকের।
স্থানীয় কৃষকের কাছে এ পোকা জ্ঞাত হলেও মোংলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনিমেষ বালা জানান, পোকাটি বাদামী ঘাস ফড়িং। এ ঘাস ফড়িং থেকে আমন ধান রক্ষায় সব ধরনের পরামর্ দিচ্ছেন তারা।
কৃষি বিভাগের নানামুখি তৎপরতা থাকলেও ধান পাকা আগেই পোকার আক্রমনে নষ্ট হয়ে গেছে তা। চলতি মৌসুমে আমন ফসলের এ বিপর্যয়ে চরম হতাশার মুখে পড়েছেন সেখানকার শত শত ।
কৃষকরা বলেন, গবাদি পশুর জন্য খড় সংগ্রহ করতে গেলেও উঠবে না তাদের শ্রমিকের মজুরি।
কৃষকদের কেউ কেউ বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও ও সমিতি সহ চড়া সুদ ও দাদন নিয়ে ধান চাষ করেছিলে। একটু ভাল ফলনের আশায় অর্থ লগ্নি ও কৃষান ও দিনমজুর সহ হাড়ভাঙ্গ পরিশ্রম করেন কৃষকরা। আশায় বুক বেঁধে ছিলেন বাম্পার ফলন সহ নতুন ধান ঘরে তুলবেন। শোধ করবেন লগ্নি করা অর্থ আর যোগান হবে বছরের প্রয়োজনীয় খাদ্য। কিন্তু কৃষকদের সেই আশা নিরাশায় পরিনত হয়েছে অজ্ঞাত পোকার আক্রমনে।
লবনাক্ততা ও চিংড়ি চাষ অধুষিত মোংলা এলাকার কৃষকরা একমাত্র আমন ফসলের ওপরই নির্ভর করে । তাই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা পেলেে আর্থিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষকরা।