নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালী সদর উপজেলার কালাদরাপ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাদাৎ উল্যাহ সেলিমের ব্যক্তিগত অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এসময় সন্ত্রাসীদের হামলায় ৭ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র সূচকে এগিয়েছে দেশ
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) রাত ৮টার দিকে উপজেলার কালাদরাপ ইউনিয়নের পশ্চিম শুল্লুকিয়া গ্রামে ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাৎ উল্যাহ সেলিমের বাড়ির সামনে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সামাজিক একটি বিষয় নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা কবির ও হামজার মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। ওই ঘটনাকে ইস্যু করে ইমতিয়াজ, হামজা, মামুন ও হেঞ্জুসহ একদল লোক চেয়ারম্যানের রড-সিমেন্ট দোকানে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় চেয়ারম্যানের বাবা এনায়েত উল্যাহ চিৎকার করলে তারা দক্ষিণ দিকে চলে যায়। পরে দক্ষিণ দিক থেকে আরো লোকজন একত্রিত হয়ে কয়েকটি ককটেল ফাটিয়ে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে চেয়ারম্যানের অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর চালানো হয়। পরে তারা পাশের দোকানগুলোতেও হামলা ও ভাংচুর করে। এসময় তাদের হামলায় কয়েকজন আহত হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মো.রাজু ও রড সিমেন্ট দোকানের ম্যানেজার নোমান বলেন, চেয়ারম্যানের সঙ্গে কোন ইস্যু ছাড়াই অন্য একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে ইমতিয়াজের নেতৃত্বে পরিকল্পিতভাবে অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
আরও পড়ুন: তিউনিশিয়ায় নৌকাডুবিতে নিহত ১৪
ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাৎ উল্যাহ সেলিমের বাবা এনায়েত উল্যা বলেন, রাত ৮টার দিকে আমি দোকানে সারাদিনে বিক্রির হিসাব করতেছিলাম৷ এসময় হঠাৎ কয়েকটি ককটেলের শব্দ হয়। মুহূর্তের মধ্যে ইমতিয়াজ নামের একজন সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে স্থানীয় হামজা, মামুন ও হেঞ্জুসহ একদল স্বীকৃত সন্ত্রাসী আমার দোকানে এসে দোকানের সার্টারে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ক্যাস বাক্সে থাকা নগদ ৩ লক্ষাধিক টাকা ও মালামাল লুট করে নেয়। এসময় তারা আমার ছেলের অফিস ও পাশের দোকানপাট, কয়েকটি মোটরসাইকেলে ভাঙচুর করে। সন্ত্রাসীদের হাত থেকে জাতির পিতার ছবিও রক্ষা পায়নি। তারা বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর করে ফ্লোরে ফেলে দেয়। এতে বাঁধা দিতে গেলে অস্ত্রধারীদের হামলায় ইসমাইল, করিম, রশিদ ও সুলতানসহ ৭জন আহত হয়েছে। পরে স্থানীয় লোকজন এসে আহতের মধ্যে গুরুত্বর আহত ৪জনকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
কালাদরাপ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাদাৎ উল্যাহ সেলিম বলেন, আমি ঘটনার সময় এলাকায় ছিলাম না। আমার অনুপস্থিতিতে সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে সাবেক চেয়ারম্যানের নির্দেশে সদর পশ্চিমাঞ্চলের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের একত্রিত করে আমার অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। আমি প্রশাসনের কাছে এই নেক্কারজনক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
আরও পড়ুন: লাগামহীন দ্রব্যমূল্যে দিশেহারা জনগণ
কালাদরাপ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় ডাক্তারের কাছে গিয়েলাম। লোক মারফত শুনতে পেয়েছি বর্তমান চেয়ারম্যানের বাবা তাদের সমাজের মসজিদের ইমাম সাহেবকে মসজিদ থেকে বিদায় করে দিয়েছেন। ওই ঘটনায় সমাজের মানুষ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে আমি কোনভাবেই জড়িত নয়।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সান নিউজ/এমআর