নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরিশাল: বরিশালে বাস মালিক সমিতি এবং থ্রি-হুইলার চালকদের মধ্যকার বিরোধ নিরসনে আগামীকাল রোববার (০৯ আগস্ট) বৈঠকে বসবে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি)। বৈঠকে পরিবহন মালিক শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের এই দ্বন্দ্বের স্থায়ী সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, ‘মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল অবৈধ। তেমনি বাস মালিক সমিতির চেকপোস্ট বসানোও অবৈধ। মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধ করা পুলিশের দ্বায়িত্ব, বাস মালিক সমিতির নয়। বাস মালিক সমিতি পুলিশের সাহায্য নেবে। কিন্তু চেকপোস্ট বসিয়ে থ্রি-হুইলার চলাচলে বাধা দেওয়ার এক্তিয়ার নেই। এরপরেও পুরো বিষয়টি নিয়ে নিয়ে আলোচনা করা হবে। আশা করছি, মহাসড়কে বাস এবং থ্রি-হুইলার চলাচল নিয়ে দীর্ঘদিনের যে দ্বন্দ্ব চলমান রয়েছে, তা ওই বৈঠকের মাধ্যমে তার চূড়ান্ত সমাধান হবে।’
সর্বশেষ শুক্রবার (০৭ আগস্ট) ভোর ৭টায় চেকপোস্টে বাসমালিক ও শ্রমিকদের ওপর হামলা অভিযোগ করেন রূপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন। তিনি দাবি করেন, শুধু মারধরই নয়, মাহিন্দ্রা শ্রমিকরা দুজন বাস মালিককে কুপিয়েছেন।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওইদিন বাসমালিক বা শ্রমিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেনি। ঢাকা থেকে আসা লঞ্চ যাত্রীদের নিয়ে শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে তিনটি মাহিন্দ্রা বাকেরগঞ্জ ও নলছিটির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ওই তিনটি মাহিন্দ্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে যাওয়ার পথে বাস মালিক সমিতির চেকপোস্টে থাকা লোকজন তাদের গতিরোধ করেন। পরে মহাসড়কে যাত্রী পরিবহনের অপরাধে মাহিন্দ্রা চালক লাবলু, মনোয়ার এবং নূরুকে মারধরসহ যাত্রী থাকাবস্থায় তিনটি মাহিন্দ্রার সামনের গ্লাস ভাঙচুর করেন।
বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন বলেন, ‘শুক্রবারের ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। কি কারণে মাহিন্দ্রা শ্রমিকরা বাসমালিক-শ্রমিকদের ওপর হামলা করেছেন, সেটা আমার বোধগম্য নয়। ওইদিন সকালে বাসমালিক মতিন হাওলাদার ও সুলতান হাওলাদারকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ সময় পাঁচটি বাসের গ্লাস ভাংচুর করেন তারা। এতে বাসে থাকা কয়েকজন যাত্রী আহত হন। তারা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।’
মহাসড়কে অবৈধভাবে চেকপোস্ট বসানো প্রসঙ্গে শিপন বলেন, ‘করোনার মধ্যে আমাদের বাসে যাত্রী কম ওঠে। তার মধ্যে মাহিন্দ্রাগুলো অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। অথচ মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল নিষিদ্ধ। পুলিশও তাদের বাধা দেয় না। এ কারণে আমাদের সমিতি চেকপোস্ট বসিয়ে বিষয়টি তদারকি করে।’
তদারকির নামে আইন হাতে তুলে নেওয়া হচ্ছে কি না?- জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান বাস মালিক সমিতির এই নেতা।
তবে মাহিন্দ্রা শ্রমিকরা দাবি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে মাহিন্দ্রা চালক এবং যাত্রীদের হয়রানির পাশাপাশি চাঁদাবাজি করে আসছেন বাস মালিক সমিতির লোকজন। কোনো কোনো সময় তারা মাহিন্দ্রা থামিয়ে চাকা ফুটো করে দেন এবং চালকদের মারধর করেন তারা।
সান নিউজ/ এআর