কামরুল সিকদার (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ২০১৭ সালে সংঘটিত একটি জোড়া খুনের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় বাদিপক্ষের সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহতের পরিবারবর্গ। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে নিহতের পরিবারের সদস্যরা উপজেলার শেখর ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামে নিজ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
আরও পড়ুন: টিএমজিবির সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদ
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত ইদ্রিস মোল্যার কলেজ পড়ুয়া ছেলে ইসমাইল মোল্যা (১৯)।লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, একই গ্রামের কাওসার শেখের ছেলে মোঃ ওহিদ শেখ, মোঃ এনায়েত শেখ ও সিদ্দিক মোল্যার ছেলে মোঃ আজম মোল্যার সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে আমাদের পরিবারের সাথে বিরোধ চলছে। এই বিরোধের জেরে ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমার বাবা মোঃ ইদ্রিস মোল্যা ও কাকা লাভলু মোল্যাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ব্যবসায়িক কাজ শেষে আলফাডাঙ্গা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিবাদীগন আলফাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। হত্যাকান্ডটি আলফাডাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় হওয়ায় উক্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমার পরিবার আলফাডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা করে। মামলাটি সেশন ৮১/২০ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২ আদালত ফরিদপুরে বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে।
গত বছরের ২৭ মার্চ আমার কাকা আবুল কাশেম মোল্যা আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলে তাকে কওসার শেখের ছেলে আবু আলী ও ইয়াকুব প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় বোয়ালমারী থানায় জিডি করা হয়। এরপর চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি কওসার শেখের ছেলে ইনায়েত শেখ, ওহিদ শেখ, সিদ্দিক মোল্যার ছেলে আজম মোল্যা মামলার অপর সাক্ষী আবুল কালাম আজাদকে ফরিদপুর গিয়ে সাক্ষ্য দিতে নিষেধ করেন। সাক্ষ্য দিলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেন। মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত লাভলু মোল্যার স্ত্রী নার্গিস বেগম এবং নিহত ইদ্রিস মোল্যার স্ত্রী রেবেকা বেগম বলেন, আমরা আমাদের স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নিহত ইদ্রিস মোল্যার আরেক ছেলে ইয়াছিন মোল্যা (২৫), মেয়ে সাগরিকা (২৭), নিহত লাভলু মোল্যার পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে সম্রাট (১০), দ্বিতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত মেয়ে লামিয়াসহ (৭) নিহতদের পরিবারের সদস্যরা প্রমুখ।
আরও পড়ুন: গজারিয়ার ফুলদী নদী ছাড়ছে বেদে পরিবার
উল্লেখ্য, গ্রাম্য দলাদলিকে কেন্দ্র করে ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে পার্শ্ববর্তী আলফাডাঙ্গা বাজার থেকে বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামে অবস্থিত নিজ বাড়ি ফেরার পথে খুন হন আপন দুই ভাই ইদ্রিস মোল্যা ও লাভলু মোল্যা।
সান নিউজ/এসআই