কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
‘দুলাভাই মেলা’। নামটি শুনলে যে কারোর কানই একটু নড়ে ওঠার কথা। শুধু নামের কারণেই নয়, ভিন্নধর্মী আয়োজনে মধ্য দিয়ে এই মেলার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে উঠেছেন সবস্তরের মানুষ। গ্রাম-বাংলার আবহমান সংস্কৃতির অন্যতম অংশ বিলীন হতে চললেও কুড়িগ্রামবাসী সেটি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন নতুন ভাবনায়। বিলুপ্ত হওয়ার পথে গ্রামীণ ঐতিহ্যগুলোকে বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যে খলিলগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতি এই মেলার আয়োজন করেছে।
খলিলগঞ্জ বাজারে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে ব্যতিক্রমী এই মেলার। চলবে ২৫ জানুয়ারী শনিবার পর্যন্ত।
এই মেলায় রয়েছে দেশীয় কুটির শিল্প পণ্যের সমাহার, দেশীয় পোষা পাখি প্রদর্শন ও কেনা বেচা, বিভিন্ন ধরণের ওষুধি গাছ ও স্থানীয় প্রজাতির মাছ প্রদর্শন-বিতরণ ও বিক্রয়ের ব্যবস্থা। রয়েছে সামাজিক ও জনহিতকর বিভিন্ন কার্যক্রম। বিনা খরচে বিয়ের পাত্র-পাত্রীর সন্ধান, ‘আঠারোর আগে বিয়ে নয়’ স্লোগানকে সামনে রেখে যৌতুকবিহীন বিয়ের আয়োজন, প্রবীণদের ক্লাব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ, গ্রামীণ খেলাধুলার প্রতিযোগিতা, মাদক-সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ বিরোধী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রবীণ ক্লাব প্রতিষ্ঠা উদ্যোগের পাশাপাশি পুতুল নাচ ও লাঠি খেলার মতো অনেক ধরণের কর্মসূচিও চলছে মেলাকে ঘিরে। রয়েছে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমও।
সাবেক সিভিল সার্জন ডা. এসএম আমিনুল ইসলাম জানান, দুলাভাই মেলায় স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা রোগীদের প্রয়োজনে হাসাপাতালে নিয়ে ভর্তি এবং অপারেশনসহ অন্যান্য ব্যবস্থা বিনামূল্যে করা হবে।
ক্রেতা ছাড়াও উৎসুক মানুষের ভিড় রয়েছে মেলা জুড়ে।
আয়োজকরা জানান, দুলাভাই শব্দটি যেমন মধুর সম্পর্ককে ইঙ্গিত করে তেমনি এই মেলাও মধুরতা নিয়ে যাতে টিকে থাকে সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ মেলা শুধু মেলাই নয়, এটাকে বিশেষ কিছু জনকল্যাণকর কাজ করার একটা প্লাটফর্ম বলে বিবেচিত হবে। এখানে গরীব ও দুস্থ পরিবারের ছেলে-মেয়েদের বিয়েতে সহযোগিতা করা হবে। কিছু সামাজিক কাজের দায়বদ্ধতার পাশাপাশি শুধু পণ্য কেনা-বেচা নয়, বিনোদন পেতেও মানুষ এমন মেলায় ভিড় করবে বলেও মনে করেন তারা।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল হুদা সিমেল বলেন, আমরা ‘দুলাভাই মেলা’কে জনপ্রিয়, জনকল্যানকর ও ঐতিহ্য’র রূপ দিতে চাই। প্রায় এক যুগ আগে এখানে প্রতিবছর মাঘ মাসে দুলাভাই মেলা হতো। বন্ধ হয়ে যাওয়া সেই মেলা পুনরায় চালু করা হলো। তাই যে সকল দুলাভাই মেলায় এসেছেন তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে যারা আসেননি তাদের আসার আমন্ত্রণ জানান তিনি।