মো. নাজির হোসেন (মুন্সীগঞ্জ) : মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার দোরাবর্তী গ্রামে ১০ একর জমিতে মূলা চাষ করে হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন স্হানীয় বিধাবা নারী (৬০)। তার উৎপাদিত মূলা বীজ বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। উপজেলার আউটশাহী ইউনিয়নের দোরাবর্তী গ্রামের প্রয়াত সোরহাব সর্দারের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম স্বামীর মৃত্যূর পর নিজেই লোকজন নিয়ে করছেন বিস্তির্ণ জমিতে মূলা চাষ । এ চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় দিনের পর দিন চাষ বৃদ্ধি করে চলেছেন । উপজেলার দোরাবর্তী ও নেত্রাবর্তী মৌজার ১০ একর জমি লিজ নিয়ে তিনি এ বছর করেছেন এ মূলা চাষ।
আরও পড়ুন: বিডার ভবনটি উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামী ৩০ বছর আগে থেকে মূলা চাষ করে আসছে। আমি আমার স্বামীর কাছ হতে এ মূলা চাষ শিখেছি। আমার স্বামী ৬ বছর আগে মারা যায় । মারা যাওয়ার পর আমি নিজেই জমি লীজ নিয়ে এখোন চাষাবাদ করছি। বছরে বছরে চাষাবাদ বৃদ্ধি করে চলেছি। এ বছর ১০ একর জমিতে চাষ করছি। ফলন ভালো হয়েছে। আসা করি ভালো লাভবান হবো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের তেমন জমিজমা নেই। পরের জমি লিজ নিয়ে প্রতিবছর চাষাবাদ করি। ১ একর জমি লিজ নিতে ৪০-৫৫ হাজার টাকা প্রয়োজন হয়। তারপরে শ্রমিকের মূল্য বেশি । আমি সব কাজ শ্রমিক দিয়ে করাই। মূলাগুলো দানা পাকার পরে ওগুলি শ্রমিক দিয়ে সংগ্রহ করি। সংগ্রহ করার পরেই বিভিন্ন জেলা হতে পাইকারারা এসে মূলা দানাগুলো আমার বাড়ি হতে এসে কিনে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, মূলত আমি মহিলা মানুষ হওয়ায় এগুলো আড়ৎতে নিয়ে বিক্রি করতে পারি না। এ জন্য মূলা দানার নায্য মূল্য পাইনা।
স্থানীয় কৃষক ঝিলু মিয়া বলেন, নারী হওয়ার পরেও সাহসীকতার সহিত শ্রমিক নিয়ে অত্যান্ত সফলতার সাথে মূলা চাষ করছেন আনোয়ারা বেগম। আগে তার স্বামী এ অঞ্চলে একমাত্র মূলা চাষ করতো । স্বামী মৃতূর পরে আনোয়ারা বেগম নিজেই মূলা চাষ করছেন। সে দিন দিন মূলা চাষ বৃদ্ধি করছেন। স্বামীর চেয়েও বেশি জমিতে তিনি এখোন মূলা চাষ করছেন।
আরও পড়ুন: চীনা বেলুনটি ধ্বংস করলো যুক্তরাষ্ট্র
স্থানীয় অপরচাষী গৌরাঙ্গ বলেন, অনেক আগে থেকে সোরহাব সর্দার একা এই এলাকায় মূলা চাষ করতো। সে মারা যাওয়ার পরে তার স্ত্রী চাষ করতেছে। সে জমি লিজ নিয়ে মানুষ দিয়ে চাষ করায়। জমিতে মূলার বীজগুলো পাকলে শ্রমিক দিয়ে মূলাগাছ জমি হতে কেটে বাড়িতে নিয়ে গাছ হতে বীজ সংগ্রহ করে পরে বিক্রি করে । মানুষজন তার বাড়িতে এসে এগুলো কিনে নিয়ে যায়।
আনোয়ারা বেগমের প্রতিবেশী মো. আয়নাল সরদার বলেন, দোরাবর্তী ও নেত্রাবর্তী মৌজার ১০ একর জমিতে এ বছর মুলা চাষ করেছেন আনোয়ারা। তিনি মূলত মূলা বিক্রি করেন না। মূলা হতে বীজ হলে ওই বীজগুলো সংগ্রহ করে বিক্রি করেন। বীজগুলো দেশের বিভিন্ন জেলা হতে লোকজন তার বাড়িতে এসে কিনে নিয়ে যান।
এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়নুল আবেদিন বলেন, মূলা চাষে সরকার কোন সহযোগীতা প্রদান করেনা। যেসব শষ্যগুলো আমাদের খুব প্রয়োজনীয় যেমন ধান, শরিসা এগুলোতে সরকার মূলত সহযোগীতা করে। এছাড়া পুষ্টিগুণ সম্পন্ন, উচ্চ ফলনশীল, আধুনিক চাষাবাদে সরকার বেশি সহযোগীতা করে থাকে।
আরও পড়ুন: ইস্টার্ন রিফাইনারির খরচ দাঁড়াবে ২৩ হাজার কোটি
তিনি আরও বলেন, টঙ্গিবাড়ীতে মূলা চাষের কোন লক্ষ্যমাত্র নেই। এই শষ্য আমাদের বেশিক প্রয়োজনীয় না হওয়ায় সরকার থেকে এ চাষে কোন সহযোগীতা করা হয়না।
সান নিউজ/এসআই