নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চরজব্বর ইউনিয়নে নুরজাহান বেগম (৫৭) নামে এক নারীকে পাঁচ টুকরো করে নৃশংসভাবে হত্যা ঘটনায় নিহতের ছেলেসহ ৭ আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। একই সাথে প্রত্যেক আসামিকে ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : মুন্সীগঞ্জে ছাত্রদলের কম্বল বিতরণ
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুর ১২টরে দিকে নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিলুফার সুলতানা এ রায় দেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির হুমু (৩২), নিরব (২৬), নুর ইসলাম (৩২), কালাম (৩০), সুমন (৩৩), হামিদ (২৮) ও ইসমাইল (৩০)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল বলেন, এ হত্যার ঘটনায় প্রথমে নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির হুমা (৩২) বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
পুলিশি তদন্তে হত্যার সঙ্গে সরাসরি সন্তানের জড়িত থাকার বিষয়টি ওঠে আসে। একইসঙ্গে তার সাত সহযোগী মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রমাণ পায় পুলিশ।
আরও পড়ুন : শেখ হাসিনার নির্দেশে ডা. দিলীপ রায়ের কম্বল বিতরণ
গুলজার আহমেদ জানান, ‘রায় ঘোষণার সময় আদালতে ৭ আসামি উপস্থিত ছিলেন। এই মামলায় ২৭জনের স্বাক্ষী গ্রহণ করা হয়। আসামিদের মধ্যে ৫ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। একইসঙ্গে আটক নিহতের ছেলের বন্ধু নিরব ও কসাই নুর ইসলামের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাপাতি, বালিশ, কোদাল ও নিহতের ব্যবহৃত কাপড় উদ্ধার করা হয়।’
উল্লেখ্য, নিহতের ছেলে তার সহযোগীদের নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
জানা গেছে, নিহত নারীর দুই সংসারের আগের পক্ষের ছেলে বেলাল তাকে জিম্মায় রেখে মোটা টাকার ঋণ নেয় সুদের ভিত্তিতে। ইতিমধ্যে, বেলাল মারা যাওয়ার পর ঋণ পরিশোধ করার জন্য পাওনাদাররা চাপ প্রয়োগ করে। এ সময় হুমায়ুন তার মাকে বিষয়টি অবহিত করলে তার নুরজাহান বেগম জমি বিক্রি করে এ ঋণ পরিশোধ করতে বলেন। মায়ের কথায় ক্ষুব্ধ হয়ে এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করে নিহতের ছেলে। জমির লোভে তাকে সহযোগিতা করেন প্রতিবেশী ইসমাইল ও হামিদ।
আরও পড়ুন : প্রবাসীর স্ত্রীর হাত-পা ভেঙে দিল মাদক ব্যবসায়ী
হুমায়ুন জবানবন্দিতে জানান, ‘বেলালের স্ত্রীর জমি থেকে দুই শতাংশ হামিদকে ও বাকি আট শতাংশ ইসমাইলকে দেওয়ার মৌখিক সিদ্ধান্ত হয়। তারপর মায়ের জমি সমান পাঁচ ভাগ করে হুমায়ুন, নোমান, সুমন, কালাম ও কসাই নুর ইসলামকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ প্রতিশ্রুতিতে তারা গত ৬ অক্টোবর বাড়ির পাশে একটি ব্রিজের ওপর বসে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করে। পরে তারা রাতের কোনো এক সময়ে ঘরের মধ্যে বালিশ চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করে পাঁচ খণ্ড করে পাওনাদারদের ধানক্ষেতে তা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখে তারা।’
সান নিউজ/এনজে/এসআই