রহমত উল্লাহ (টেকনাফ) : মিয়ানমারে নিষিদ্ধ সংগঠন রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনীসহ ২৮ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দিতে কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরে পোস্টার লাগানো হয়েছে। ওই পোস্টারে বার্মিজ ভাষায় তাদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ত্রিশালে পরীক্ষার্থীদের আয়োজনে কম্বল বিতরণ
২১ জানুয়ারি (শনিবার) সকাল থেকে উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালীর বিভিন্ন ক্যাম্পে এ ধরনের পোস্টার দেখতে পান সাধারণ রোহিঙ্গারা। ক্যাম্পে ১১, ১২, ১৮ ও ১৯ নং ক্যাম্পে এসব পোষ্টার বেশি দেখা গেছে বলে জানিয়েছে তারা। তবে কারা এ পোস্টার লাগিয়েছে তা জানা যায়নি।
পোস্টার প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করে ৮-আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আমির জাফর বলেন, পোস্টার বিভিন্ন ক্যাম্পে দেওয়া হয়েছে সেটা সঠিক তবে তা আমরা প্রকাশ করিনি। পোস্টারে থাকা সন্ত্রাসীরা যদি কোনো মামলার আসামি হয় তাহলে তাদের যেকোনোভাবে গ্রেফতার করা হবে।
তিনি জানান, ক্যাম্পের বিভিন্ন স্থানে আমাদের নজরদারি রয়েছে। গোয়েন্দা তৎপরতাও রয়েছে। তাদের দেখা গেছে, এমন কোনো খবর আসলে তাদের গ্রেফতার করা হবে।
পোস্টারে থাকা ২৮ জন হলেন- আরকান রোহিঙ্গা স্যালভ্যাশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনী, হেদায়েত উল্লাহ ওরফে খালেদ, মৌভলী মোস্তাক (এফসিএন নং- ০২৪৩৭৭), মৌলভী লাল মোহাম্মদ ওরফে বোরহান, নুর কামাল ওরফে সমি উদ্দিন (এফসিএন নং- ১৩১৪৪১), ইব্রাহীম (এফসিএন নং- ১৪০২১০), মৌলভী জাকারিয়া (এফসিএন নাম্বার নং- ১২৮৬৫৫), কাউসার ওরফে সাবের, খায়রুল আমিন ওরফে ইব্রাহীম, আলী জোহর (এফসিএন নং- ২৮৪৬৫২), হাফেজ ইউনূছ, সানাউল্লাহ, জুলাইয়ার (এফসিএন নং- ১৩০৪৫১), শফিক (এফসিএন নং- ৫০৫৯৭২), নুর মাহমুদ (এফসিএন নং- ১৩৯৬৪৬), হাফেজ নুর মোহাম্মদ(এফসিএন নং- ১২৮৯১৩), আব্দুর রহমান, হাসান, জাহিদ হোসেন ওরফে লালু, মাস্টার আব্দুর রহিম, জান্নাত উল্লাহ, মোহাম্মদ সলিম, মাহামুদুর রহমান, মোহাম্মদ জুবাইয়ের (এফসিএন নং- ১১২৩৫৩), মোহাম্মদ আলম ওরফে মুসা।
আরও পড়ুন: ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার
পোস্টারে বার্মিজ ভাষায় যা লেখা ছিল- ‘তারা সন্ত্রাসী। এ মানুষগুলোকে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান। যদি কোনো ক্যাম্পে কেউ তাদের দেখতে পায় তাহলে সংশ্লিষ্টদের অবহিত করার জন্য বলা হলো।
স্থানীয় রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ‘সকাল থেকে বিভিন্ন ক্যাম্পের ব্লকে ব্লকে এ ধরনের পোস্টার দেখা যাচ্ছে। যেখানে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসীদের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। সঙ্গে অনেকের ফ্যামিলি কাউন্টিন নম্বরও দেওয়া হয়েছে।
বালুখালী ক্যাম্পে-৮ এর ব্লক মাঝি মোহাম্মদ খলিল বলেন, ‘তাদের গ্রেফতার করতে পারলে ক্যাম্পে শান্তি ফিরবে। আমরাও চেষ্টা করছি তাদের ধরিয়ে দিতে। ক্যাম্পের অর্ধেক অপরাধ এদের নিয়ন্ত্রণে চলে। বিভিন্ন সময় মহড়াতেও তাদের দেখেছি। আমরা সরকারকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি।
বালুখালী ক্যাম্পের মাঝি রহিম উদ্দিন বলেন, ‘১৮, ১৯ নং ক্যাম্পে এসব পোস্টার দেখা যাচ্ছে। সরকারকে সহযোগিতা করতে আমরা আগ্রহী। আমরা দেখতে পেলে প্রশাসনকে জানাবো।’
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় সেচ কার্যক্রম বন্ধ, নেপথ্যে পূর্ব শত্রুতা
তুমব্রু সীমান্তে সহিংসতার কারণে যাতে ক্যাম্প কোনো ধরনের প্রভাব না পড়ে সেজন্য ক্যাম্পজুড়ে টহল জেরদার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ৮-আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আমির জাফর।
সান নিউজ/এসআই