নিজস্ব প্রতিনিধি:
বর্ষার কারণে জমেনি যশোরের কোরবানি ঈদ পরবর্তী প্রথম চামড়ার হাট। ট্যানারি প্রতিনিধি ও বাইরের ব্যাপারীদের সমাগম এবং চামড়ার আমদানিও ছিলো কম। এ অবস্থায় চামড়ার ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে হতাশ ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই। সংশ্লিষ্টদের দাবি, সরকার নির্ধারিত মূল্য বাস্তবায়ন হচ্ছে না ক্রয়-বিক্রয়ে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহৎ চামড়ার মোকাম যশোরের রাজারহাটে ঈদ পরবর্তী প্রথম হাট ছিল মঙ্গলবার (৪ আগস্ট)। এ হাটে খুলনা বিভাগের ১০ জেলা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে আসা চামড়া ক্রয়-বিক্রয় হয়। কিন্তু ভোর থেকে বিরামহীন বৃষ্টির কারণে হাটে চামড়া নিয়ে আসতে পারেননি ক্ষুদ্র ব্যাপারীরা। খুলনা ও যশোরের কিছু ব্যবসায়ী অল্পসংখ্যক চামড়া নিয়ে এলেও তা কেনার জন্য হাটে ছিলো না ট্যানারি প্রতিনিধি ও বাইরের ব্যাপারী। ফলে হাটে আসা চামড়াগুলোও কাঙ্খিত দামে বিক্রি করতে পারেননি তারা।
এদিকে, ক্রেতাদের দাবি ট্যানারি থেকে বকেয়া না পাওয়ায় এবং সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি নিয়ে সংশয় থাকায় তারা দাম দিয়ে চামড়া কিনতে সাহস পাচ্ছেন না।
ক্রেতারা বলেন, চামড়ার আমদানি নেই। ব্যাপারীরা বেশি দাম চাচ্ছেন। বকেয়া টাকা না পাওয়ায় অর্থ সংকট রয়েছে। যে কারণে চামড়া কিনতে পারছি না। তাছাড়া বেশি দামে চামড়া কিনে তা বিক্রি করবো কোথায়? কারণ ট্যানারি মালিকরাও সরকার নির্ধারিত মূল্যে চামড়া কিনতে চায় না। সুযোগ নেওবার চেষ্টা করে।
ক্রেতারা আরও বলেন, বাইরের ব্যাপারী না আসায় চামড়ার দাম কম। আজকের হাটে ভালো মানের চামড়া নেই। যে কারণে কিনতে পারছি না। আগামী শনিবারের হাটের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
বৃহত্তর যশোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি আলাউদ্দিন মুকুল বলেন, বর্ষার কারণে হাট জমেনি। তবে শনিবারের হাট জমবে এবং ব্যবসায়ীরা আশানুরূপ দামে চামড়া ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন। সীমান্তে রেড এলার্ট জারি থাকায় এ বছর চামড়া পাচারের কোনও আশংকা নেই বলেও জানান তিনি।
জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেনের দাবি, বড় ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে সরকার নির্ধারিত মূল্য বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তিনি বলেন, সকাল থেকে হাটে আছেন। ছাগল ও গরুর চামড়া যে দামে বিক্রি হচ্ছে তাতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, সরকার চামড়া ক্রয়ের জন্য কোটি কোটি টাকা ঋণ দিলেও তা মাঠ পর্যায়ে এসে পৌঁছাচ্ছে না। তাছাড়া বড় ব্যাপারীরা নিজেরা লাভবান হতে চামড়া না কিনে বসে থাকছেন। যখন বিক্রেতারা হতাশ হয়ে পড়ছেন, তখন কম দামে কিনছেন। যা চরম অনৈতিক কাজ। চামড়ার পাচার রোধে পুলিশ ও বিজিবির সহায়তায় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।