নিজস্ব প্রতিনিধি:
মোংলা (বাগেরহাট): জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মোংলায় গৃহবধূ রুপা বেগমের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে চিহ্নিত ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসীদের দায়ের কোপে মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হয়ে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। রুপা বেগমের শারিরীক অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন তার স্বজনেরা।
হামলার ঘটনায় ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে আহতের পরিবার।
আহত রুপা বেগমের শাশুড়ি নুর নাহার বেগমের অভিযোগ, মোংলা পৌর শহরের মোর্শেদ সড়ক এলাকায় একটি জমির বায়না করেন তিনি। বায়নাকৃত সম্পত্তি এক খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে রেজিস্ট্রি করে দিতে পারেননি বায়নাদাতা। তবে ভোগদখল দিয়ে দেন বায়না গ্রহীতাকে। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও বায়নাদাতা ভূমি রেজিস্ট্রি করে না দেওয়ায় আদালতে মামলা করেন তিনি। ওই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি ভূমিদস্যু চক্র তাকে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকেন।
গত ২৯ জুলাই দুপুরে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে বিরোধপূর্ণ জায়গাটি মো. মহিদুল ইসলাম, মনি বেগম, মো. রনি, মো. জনি, ফাতেমা বেগম, ইয়াসিন আকন, রুস্তম হাওলাদার, জোহরা বেগম, মো. স্বপন, আরো অজ্ঞাত ২/৩ জন মিলে দখল নেওয়ার চেষ্টা চালান। বাধা দিতে গেলে নুর নাহারের পুত্রবধূ রুপা বেগমের ওপর হামলা চালান তারা। তাদের দায়ের কোপে মাথায় গুরুতর আঘাত পান রুপা। গুরুতর আহত রুপা বেগমকে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে তাকে।
স্ত্রীকে দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখমের অভিযোগে নয়জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত ২/৩ জনের বিরুদ্ধে মোংলা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রুপা বেগমের স্বামী মো. রাজু। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো আসামি আটক হননি।
শাশুড়ি নুর নাহার আরো জানিয়েছেন, সাতটি সেলাই দেওয়া হয়েছে পুত্রবধূর মাথায়। অনেক রক্তক্ষরণের কারণে তার শারিরীক অবস্থা খুবই খারাপ। খাওয়া-দাওয়া বন্ধ রয়েছে কয়েকদিন ধরে। শুধুমাত্র স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে তাকে।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, মারামারির ঘটনা নিয়ে তদন্ত করছেন তারা। বাদীপক্ষ আর আহত গৃহবধু খুলনায় থাকায় প্রয়োজনীয় তথ্য না পাওয়ায় তারা এখনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি।
অভিযুক্ত মহিদুল বলেন, তিনি বিরোধপূর্ণ জায়গার সমাধান চেয়ে মোংলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন। তাই এ নিয়ে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি নন।
মোংলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আসিফ ইকবাল বলেন, ‘লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টির মীমাংসা করতে উভয়পক্ষকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু এর মধ্যেই দুই পক্ষের মারামারির ঘটনা শুনতে পাই। আহত রুপা বেগম সুস্থ হলে প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/ এআর