নিজস্ব প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জ: সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র নির্মল সেনের ৯০তম জন্মবার্ষিকীতে তার জন্মস্থানে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৩ আগস্ট) সকালে নির্মল সেন স্মৃতি সংসদ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামের নির্মল সেন স্কুল অ্যান্ড মহিলা কলেজে এ সভার আয়োজন করে।
নির্মল সেনের ১৯৩০ সালের ৩ আগস্ট দিঘীরপাড় গ্রামের সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামের নির্মল সেন স্কুল অ্যান্ড মহিলা কলেজে প্রাঙ্গণে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নির্মল সেনের ভাতিজা সাংবাদিক রতন সেন কঙ্কন। আলোচনায় অংশ নেন গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম মুন্নু, শেখ লুফর রহমান ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ গৌরাঙ্গ লাল চৌধুরী, সাংবাদিক মিজানুর রহমান বুলু, জ্ঞানের আলো পাঠাগারের মনিরুজ্জামান জুয়েল। প্রয়াত সাংবাদিক নির্মল সেনের জীবনাদর্শ তুলে ধরে তা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান বক্তারা।
নির্মল সেনের বাবার নাম সুরেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত ও মাতার নাম লাবণ্যপ্রভা সেনগুপ্ত। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম। নির্মল সেনের রাজনীতিক জীবন শুরু হয় ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের মাধ্যমে স্কুলজীবন থেকে। কলেজজীবনে তিনি অনুশীলন সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। দীর্ঘদিন শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সভাপতি ছিলেন। রাজনীতি করতে গিয়ে নির্মল সেনকে জীবনের অনেকটা সময় জেলে কাটাতে হয়েছে।
দৈনিক ইত্তেফাকের মাধ্যমে নির্মল সেন তার সাংবাদিকতার জীবন শুরু করেন ১৯৫৯ সালে। তারপর দৈনিক আজাদ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলা পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। তিনি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। নির্মল সেনের লেখা ‘পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ’, ‘মানুষ সমাজ রাষ্ট্র’, ‘বার্লিন থেকে মষ্কো’, ‘মা জন্মভূমি’, ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’, ‘আমার জীবনে ৭১-এর যুদ্ধ’ ও ‘আমার জবানবন্দি’ উল্লেখযোগ্য। ২০১৩ সালের ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নির্মল সেন মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তার দেহ পিজি হাসপাতালে দান করে যান।
সান নিউজ/ এআর