মো.নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: এসএসসি পরীক্ষার্থী জেসিকা মাহমুদ (১৬) হত্যাকাণ্ডে খুনিদের ফাঁসির দাবিতে বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারী) বিকেলে মুন্সীগঞ্জ শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে সহপাঠি শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৩ টার দিকে শহরস্থ এভিজেএম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে।
আরও পড়ুন: সংসদ অধিবেশন চলছে
পরে মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মানববন্ধন করে। এ সময় নিহতের সহপাঠি ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জেসিকা হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামী বিজয় রহমান ও দুই নম্বর আসামী গ্রেফতারকৃত আদিবা আক্তারের ফাঁসি চেয়ে শ্লোগান দেয়। বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী বিক্ষোভকালে মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাব সংলগ্ন শেখ মুজিব সড়ক উত্তাল হয়ে ওঠে।
ঐ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী ফাবিয়া আক্তার বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্রী জেসিকাকে যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই। এমন ঘটনা আর যেন না হয়।
আরও পড়ুন: সোমালিয়ায় বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ৩৫
১০ম শ্রেণীর ছাত্রী ইথিয়া বলেন, জেসিকাকে যারা এমন নির্মমভাবে হত্যা করছে তাদের ফাঁসি চাই। গ্রেফতার ছাড়াও যারা জড়িত। তাদের তাড়াতাড়ি গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানাই।
প্রেমের বিরোধ নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জ শহরের কোর্টগাঁও এলাকায় শহর ব্যবসায়ী সমিতির বাড়িতে এসএসসি পরিক্ষার্থীকে মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বিজয় রহমান ও তার প্রেমিকা আদিবা আক্তার।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি ও টাকা পাচার বন্ধ করতে হবে
এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় নিহত জেসিকার ভাই মো. শাহরিয়ার জিদান বাদী হয়ে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা বিজয় রহমান ও আদিবা আক্তারের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও এক থেকে দুইজনকে আসামী করে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা রুজু করেছে।
মামলার প্রধান আসামী বিজয় রহমান শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আরিফুর রহমানের ছেলে ও দুই নম্বর আসামী আদিবা আক্তার পঞ্চসার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য জাহিদ হাসানের মেয়ে।
আরও পড়ুন: নারীদের জয় সর্বত্র
এরমধ্যে দুই নম্বর আসামী আদিবা আক্তারকে বুধবার বিকেলে শহরের উপকণ্ঠ নয়াগাঁও এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই দিন রাতে গ্রেফতারকৃত আদিবা আক্তার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. শহীদুল ইসলামের আদালেতে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরলে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ওসি মো. তারিকুজ্জামান।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরের কোর্টগাঁও এলাকার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আরিফুর রহমানের বাড়িতে ডেকে নিয়ে তার ছেলে বিজয় ও প্রেমিকা আদিবা এসএসসি পরীক্ষার্থী জেসিকা মাহমুদকে (১৬) মারধর ও শ্বাসরোধ করলে অচেতন হয়ে পড়ে। এতে বন্ধু বিজয় প্রথমে তাকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ঢাকায় প্রেরণ করেন কর্তব্যরত ডাক্তার।
আরও পড়ুন: ঢাবি ছাত্র হত্যায় ৫ জনের যাবজ্জীবন
কিন্তু ২ ঘন্টা বন্ধু বিজয় ফের এসএসসি পরীক্ষার্থীকে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত কিশোরী জেসিকা সদর উপজেলার সাতানিখিল গ্রামের সৌদি প্রবাসী সেলিম মাহমুদের মেয়ে। সে শহরের কোর্টগাঁও এলাকায় মায়ের সঙ্গে ভাড়া বাসায় বসবাস করতো।
সান নিউজ/এমআর