নিজস্ব প্রতিনিধি:
জামালপুর: উজানের পাহাড়ি ঢল আর ভারি বৃষ্টিতে জামালপুরে যমুনার পানি বেড়ে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। জেলার সাত উপজেলার ৮ পৌরসভা ও ৬০টি ইউনিয়নের ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যার কারণে তীব্র খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
দুর্গত এলাকায় মানুষ কোনোমতে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিলেও অধিকাংশ পরিবার ত্রাণের আওতায় আসেনি। গোখাদ্যের অভাব ও গরু চুরির আতঙ্ক নিয়ে দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে দিনাতিপাত করছেন বানভাসিরা। তবে জেলা প্রশাসন বলছে, বন্যার্তদের দুর্ভোগ কমাতে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
জামালপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) আব্দুল মান্নান জানান, জেলার পাঁচটি নদ-নদী ও শাখা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রোববার (২ আগস্ট) বিকাল ৫টা পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আর জামালপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বোর্ডের প্রকৌশলী মো. আবু সাঈদ জানান, উজানে ও পাহাড়ি এলাকায় আরও একটি বড় বৃষ্টিপাত হতে পারে। ফলে একটু পানি কমে আবারও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নায়েব আলী জানান, জেলায় নতুন করে নগদ আট লাখ টাকা ও ২০০ মেট্রিক টন চাল, চার হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে। এ নিয়ে বন্যায় দুর্গতদের মাঝে এক হাজার ২৮৪ মেট্রিকটন চাল, ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ১১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘বন্যার্তদের মাঝে পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতিদিন দুর্গতদের চার হাজার পিস তৈরি করা রুটির সঙ্গে গুড় এবং আশ্রয়কেন্দ্রে রান্না করা খিচুড়ি দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত আছে। ত্রাণ পাবার যোগ্য ব্যক্তি কেউ বাদ পড়বেন না।’
পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ত্রাণ বিতরণসহ বন্যা কবলিত দুর্গম চরাঞ্চলে নৌ-টহল বাড়িয়েছে জেলা পুলিশ। যেন দুষ্কৃতিকারীরা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে।
সান নিউজ/ এআর