নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরিশাল: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ওই শিক্ষার্থীর নাম সুপ্রিয়া দাস (২৩) । তিনি গণিত বিভাগের চতুর্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী।
শনিবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যা ছয়টায় ফরিদপুর শহরের নিজ বাসায় তিনি আত্মহত্যা করেন। গত ১৫ জুন সুপ্রিয়ার প্রেমিক তপু মজুমদার আত্মহত্যা করেন। এর দেড় মাস পরে ঘটলো এই ঘটনা।
ফরিদপুর শহরের পূর্বখাবাসপুর অ্যাড. নজরুল সড়কে মাতৃছায়ার দ্বিতীয়তলা থেকে গলায় ওড়না পেচানো ঝুলন্ত অবস্থায় সুপ্রিয়ার মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
সুপ্রিয়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে (গণিত) প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তার বাবা সুকুমার দাস সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষক। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিকেল চারটার দিকে তিনি মায়ের সঙ্গে টিভি দেখছিলেন। এ সময় টয়লেটে যাবার কথা বলে পাশের রুমে আসেন। কিছুক্ষণ পর পরিবারের সদস্যরা দেখতে পান, ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে ঝুলছেন সুপ্রিয়া। এরপর পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
সুপ্রিয়া দাসের সহপাঠী ও কাছের এক বন্ধু জানান, কুয়েটের শিক্ষার্থী তপু মজুমদারের সঙ্গে ইন্টারমিডিয়েট থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুজনের বাসা এক এলাকায়। উভয় পরিবার মেনে নিয়েছিল দুজনের সম্পর্ক। করোনার মধ্যেও সুপ্রিয়ার বাসায় এসেছিলেন তপু মজুমদার।
গত ১৪ জুন রাতে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। কাঁদতে কাঁদতে সুপ্রিয়া ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম থেকে উঠে দেখতে পান, অনেক মেসেজ। তাৎক্ষণিক ফোন করে জানতে পারেন, তপু আত্মহত্যা করেছেন। এরপরই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সুপ্রিয়া।
তপুর আত্মহত্যার জন্য সামাজিকভাবে তাকে দোষারোপসহ নানা কটূক্তি করা হয়। সামাজিক ও মানসিক চাপেই সুপ্রিয়া আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বলে জানান তার কাছের বন্ধুরা। সুপ্রিয়ার এমন মর্মান্তিক আত্মহননে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে। দাবি উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে মনস্তাত্ত্বিক পরামর্শ সেল গঠনের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সুব্রত কুমার বলেন, খবরটি শুনে সন্ধ্যায়ই তার বাবার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে। এটা খুবই মর্মান্তিক ঘটনা।
ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান বলেন, অপ্রত্যাশিত মৃত্যু সত্যিই বেদনাদায়ক। এই ধরনের আত্মহত্যা রোধে মনস্তাত্ত্বিক পরামর্শ সেল অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও প্রত্যেকের নিজস্ব জায়গা থেকে এটি রোধে অবদান রাখা ও এগিয়ে আসা উচিত। শুধু বাণী দিয়ে বসে থাকলে হবে না।
সান নিউজ/ এআর