রাকিব হাসনাত, পাবনা : মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ ও প্রশাসন কর্তৃক হয়রানি বন্ধসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরে রাজশাহীর ৮ জেলায় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। ফলে বন্ধ রয়েছে এইসব জেলার সকল ধরনের যাত্রীবাহী পরিবহন। বন্ধ রয়েছে ঢাকা-পাবনার দুরপাল্লার বাসও। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
আরও পড়ুন: জোড়া শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
ধর্মঘটের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে রাজশাহীর অন্যান্য জেলার ন্যায় পাবনাতেও শুরু হয়েছে এই ধর্মঘট। পাবনা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসহ জেলার সকল বাসস্ট্যান্ডগুলো বন্ধ রয়েছে। কোনও ধরনের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না।
সকালে পাবনার একাধিক বাসস্ট্যান্ড ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, বাসগুলো টার্মিনালে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সাধারণ যাত্রীরা যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু কোনও ধরনের বাসের দেখা পাচ্ছে না। স্বল্প দূরত্বের যাত্রীরা সিএনজি অটোরিকশা কিংবা ছোট ছোট যানে রওনা দিলেও দূরের যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে।
আরও পড়ুন: গৌরবময় বিজয়ের মাস শুরু
কাজী রাকিবুল ইসলাম নামের ঢাকাগামী যাত্রী বলেন, ভেবেছিলাম মনে হয় শুধু রাজশাহী অভিমুখে ধর্মঘট হবে। কিন্তু এখন তো দেখছি ঢাকাতেও যেতে পারছি না। আজকে ঢাকায় পৌঁছাতে না পারলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বো। রাজনীতির মারপ্যাচে আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের কেন এমন দুর্ভোগে পড়তে হবে? আমরা কবে এর প্রতিকার পাবো? কার কাছে পাবো?'
পাবনার টেবুনিয়া মাসুদ রানা বলেন, আগাীকাল সকাল ১০ টায় মেট্রোরেলওয়ের পরীক্ষা রয়েছে। সকালে বাসা থেকে বের হয়ে বাস ট্রার্মিনালে এসে দেখি বাস বন্ধ রয়েছে। অটোরিকশা করে হলেও বা নদী পথে হলেও ঢাকা যেতেই হবে। কারণ অনেক দিন আগের করা আবেদন। এখন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলে ক্যারিয়ারে অনক ক্ষতি হবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে বেড়েই চলছে মৃত্যু
আরিফুর রহমান বলেন, জরুরী ভিত্তিতে ঢাকা যাওয়ার সময় টার্মিনালে এসে দেখি কোন বাস নেই। বাধ্য হয়ে সিএনজিতে করে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রওয়ানা দিয়েছি।
এক গার্মেন্টস শ্রমিক জানান, পাঁছদিনের ছুটি নিয়ে পাবনার বাড়িতে আসছিলাম। গতকালই আমার ছুটি শেষ হয়েছে। মালিককে ফোন করে একদিনের ছুটি বাড়িয়ে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতের শিফটে কাজে অংশগ্রহণের কথা বলেছে। এখন বাস কাউন্টারে এসে দেখি কাউন্টারে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছেনা। সব ধরনের বাস বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্যাংক দেউলিয়া হবে না
এদিকে ধর্মঘটকে রাজশাহীর গণসমাবেশকে ঠেকানোর জন্য সরকারের নীলনকশা ও ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এডভোকেট মাসুদ খন্দকার বলেন, দুই তিন বছরের শিশুও জানে সরকার ও সরকারের আজ্ঞাবহ লোকজন আমাদের ৩ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ ঠেকাতে এই পরিবহনের ডাক দিয়েছেন। এতে কোন লাভ নেই, মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েছেন। কোনও বাধাই তাদের আটকাতে পারবে না। সরকারের পতন সুনিশ্চিত।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পাবনা মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম মমিন। তিনি বলেন, ১১ দফা দাবিতে আমরা পৃর্বেই আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলাম। তারই প্রেক্ষিতে আমাদের এই ধর্মঘট। কারো সমাবেশের জন্য এই ডাকা হয়নি।
সান নিউজ/এফই