মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে বালুচর-মোল্লাকান্দি সড়কে ধলেশ্বরী নদীর উপর নির্মিত সেতুর উত্তর অংশের নীচেই গড়ে উঠেছে ইটভাটা। একই সঙ্গে ইটভাটার পাশেই ৩ শতাধিক শ্রমিকের বাসস্থানও রয়েছে সেখানে।
আরও পড়ুন : ভোট ছাড়া ক্ষমতা দখলের সুযোগ নেই
জেলার সিরাজদীখান উপজেলার বালুচর গ্রামের ওই সেতুর নীচে সরকার ব্রিকস নামে ইটভাটা গড়ে উঠে বেশ কয়েক বছর আগে। ৪ বছর আগে সরকার ব্রিকসের কর্মকান্ড বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন।
কিছু দিন বন্ধ থাকার পর সরকার ব্রিকসই নতুনরূপে আপেল মাহমুদ ব্রিকস নামে আবারও সেতুর নীচে ইটভাটা গড়ে তোলে।
এদিকে, বালুচর ও চর বালুচর গ্রামের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরী করতে ২০১০-১১ অর্থ-বছরে ধলেশ্বরী নদীর উপর ৩ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৮০ মিটার দৈর্ঘ্য এ সেতু নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে এলজিইডি।
আরও পড়ুন : ঋণ খেলাপী মামলা, ১২ কৃষকের জামিন
এ সেতু দিয়ে সিরাজদীখানসহ জেলার ৪ টি উপজেলার বৃহত্তর জনগোষ্ঠী বিকল্প রুট হিসেবে রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করে থাকে। অথচ সেই সেতুর নীচে গড়ে উঠা ভাটায় প্রতিদিন কালো ধুয়া উড়িয়ে ইঠ প্রস্তুত করা হচ্ছে।
একই ভাটার শ্রমিকদের জন্য সেতুর নীচেই দেখা মিলেছে অর্ধশত খুপড়ি ঘর। নারী-পুরুষ শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে ওই খুপড়ি করে বসবাস করে আসছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সেতুর নীচে ইটভাটা গড়ে উঠেছে প্রকাশ্যেই। ৪ বছর আগে সরকার ব্রিকস ছিলো এখানে। প্রশাসন বন্ধ করে দিলে পরবর্তীতে একই মালিক আপেল মাহমুদ নামে নতুন রূপে আবারও ইটভাটা গড়ে তোলে।
আরও পড়ুন : বরিশালে নৌ শ্রমিকদের কর্মবিরতি
ইটভাটা তৈরীতে সরকারি নিয়ম ও পরিবেশ আইন এখানে কোনো কিছুই মানা হচ্ছে না। আবার ইটভাটার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে শ্রমিকদের বাসস্থান। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
ভাটা শ্রমিকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তারা এখানে দালালের হাত ধরে কাজ করে থাকেন। ভাটার মালিক তাদের যেখানে থাকার ব্যবস্থা করে দিবেন, সেখানেই তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতে বাধ্য।
ইটভাটার মালিক মো.আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, আমি তো আর সেতুর জমি দখল করিনি। ৪ বছর আগে সরকার ব্রিকস ছিলো। তা প্রশাসন বন্ধ করে দেয়। এখন আপেল মাহমুদ নামে ইটভাটা চলছে। সেতুর নীচে শ্রমিকদের বাসস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে শ্রমিকরা নিয়মিত থাকে না। বিশ্রাম নেয় তারা। তবে কাজ চলাকালীন শ্রমিকদের সন্তানরা থাকেন।
আরও পড়ুন : বাস চাপায় শিশুসহ নিহত ৩
উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, সেতুর নীচে বসতি নির্মাণ অত্যন্ত বিপদজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ। এমন কেউ করে থাকলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা কারখানা ও পরিদর্শন অধিদপ্তরের সহকারি মহাপরিদর্শক (সেফটি) মো. আল-আমিন বলেন, শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ বাসস্থান প্রতিটি কারখানা মালিকের নিশ্চিত করতে হবে। এ নিয়ম না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিরাজদীখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শরীফুল আলম তানভীর বলেন, সেতুর নীচে ইটভাটা ও শ্রমিকদের বাসস্থান গড়ে উঠার বিষয়টি আপনাদের কাছ থেকেই জানলাম। এমন হয়ে থাকলে তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সান নিউজ/এইচএন