কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর): ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী পৌর সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বোয়ালমারী জর্জ একাডেমিতে কাগজের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে পরীক্ষার ফি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করেছে। এতে অভিভাবকদের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: যশোর বিমানঘাঁটিতে প্রধানমন্ত্রী
জানা যায়, বিদ্যালয়টি জুন মাসে অনুষ্ঠিত অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার সময় পরীক্ষার ফি বাবদ শিক্ষার্থী প্রতি ২৫০ টাকা আদায় করলেও বার্ষিক পরীক্ষার সময় ৩৫০ টাকা করে আদায় করছে। পাঁচ মাসের ব্যবধানে শিক্ষার্থী প্রতি ১০০ টাকা করে বেশি আদায় করছে, যা অস্বাভাবিক বলেই মনে হচ্ছে অভিভাবকদের নিকট। কাগজের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে এই অতিরিক্ত অর্থ আদায় বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা। এদিকে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে গত ছয় মাসে কাগজভেদে কাগজ রিম প্রতি ৫০ থেকে ৮০ টাকা বেড়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ এক রিম কাগজে ১০০ টাকা বাড়লেও শিক্ষার্থী প্রতি পরীক্ষার ফি ১০০ টাকা বৃদ্ধি অস্বাভাবিকই। কারণ একজন শিক্ষার্থীর সব বিষয়ের পরীক্ষায় এক রিম কাগজ লাগার কথা নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক অভিভাবক বলেন, অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় পরীক্ষার ফি আদায় করা হয়েছিল ২৫০ টাকা, কিন্তু বার্ষিক পরীক্ষায় পরীক্ষার ফি আদায় করছে ৩৫০ টাকা। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার ফি বৃদ্ধি পেয়েছে ৪০%। এটা শুধু অস্বাভাবিকই নয়, অমানবিকও বটে। কারণ শিক্ষা মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। এই জায়গায় ব্যবসায়ীক মনোভাব কাম্য নয়।
এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকর্মী কামরুল সিকদার বলেন, অনেক পরিবারে একাধিক শিক্ষার্থী থাকলে তাদের অবস্থা আরো সঙ্কট জনক। অভিভাবকদের অনেককেই তাদের সন্তানদের পড়াশোনার খরচ জোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নিত্যপণ্যের বর্তমান বাজারমূল্যের সাথে পরীক্ষার ফি বৃদ্ধিতে বাড়তি চাপে পড়েছেন অধিকাংশ অভিভাবক।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমএ ব্যাপারে বোয়ালমারী জর্জ একাডেমির প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ বলেন, অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষার সময় যে কাগজের মূল্য ছিল ৪৫০ টাকা। পাঁচ মাসের ব্যবধানে সেই কাগজের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৫৯০ টাকা। আনুসঙ্গিক অন্যান্য দ্রব্যেরও মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে অস্বাভাবিক হারে। তাছাড়া আমার বিদ্যালয়ে ফুল ফ্রী এবং হাফ ফ্রীর চাপ বেশি। বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে এবার পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিদ্যালয়টির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. কামরুল হাসান বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে কিছু অভ্যন্তরিন সমস্যা থাকায় আমি মিটিং এ উপস্থিত ছিলামনা। প্রধান শিক্ষক অন্যান্য সহকারী শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করেছেন। পরে প্রধান শিক্ষকের সাথে আমার ফোনে আলাপ হয়েছে। আমি তাঁকে দ্রব্যমূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ফি নির্ধারণের পরামর্শ দিয়েছি। অভিভাবকরা অসন্তুষ্ট হন এমন সিদ্ধান্ত নেয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছি ।
আরও পড়ুন: যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত রাশিয়া
বোয়ালমারী জর্জ একাডেমির অদূরবর্তী বিদ্যালয় রাজাপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শরীফ শাহিনুল আলম বলেন, আমি আমার স্কুলে ৬ষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ২০০ এবং নবম-দশম শ্রেণির জন্যে ২৫০ টাকা ফি নির্ধারণ করেছি।
সান নিউজ/এমআর